লাইফস্টাইল

রমজানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার রুটিন কেমন হবে

সানজানা রহমান যুথী

Advertisement

রমজান আত্মশুদ্ধির মাস। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সিয়াম পালন করেন এবং ইবাদতে মশগুল থাকেন। তবে দীর্ঘ সময় রোজা রাখার কারণে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনায় ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারে না। অথচ আসন্ন পরীক্ষার জন্য এই সময়টাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল অনুসরণ করলে সিয়াম পালন এবং পড়াশোনা—দুটোই ব্যালেন্স করে চালানো সম্ভব।

আসুন রমজানে কার্যকরভাবে পড়াশোনা করার কিছু উপায় জেনে নিই, তবে ব্যক্তি বিশেষে এই কৌশলগুলো কিছুটা ভিন্নও হতে পারে।

ফজরের পর পড়াশোনা করুনসেহরি খাওয়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করুন। এরপর পড়তে বসতে পারেন। এ সময় বাতাস ঠান্ডা ও পরিবেশ শান্ত থাকে, যা মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।

Advertisement

সকালে কঠিন বিষয় পড়ুনসকালের দিকে শরীর ও মস্তিষ্ক সতেজ থাকে, ফলে মনোযোগও বেশি থাকে। তাই কঠিন বিষয়গুলো, যেমন-গণিত, বিজ্ঞান, বিশ্লেষণধর্মী অধ্যায় সকালে পড়লে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। দুপুরের পর শরীর কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে, তখন সহজ বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দিন।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুনরমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। ইফতার ও সাহরিতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। চিনি ও অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ক্লান্তি বাড়িয়ে দেয়। শরীর সুস্থ থাকলে পড়াশোনাতেও মনোযোগ বাড়বে।

পড়াশোনার সময় ব্রেক নিনএকটানা দীর্ঘক্ষণ পড়লে মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। তাই ২৫-৩০ মিনিট পড়ার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। এতে পড়ার ধকল কমবে এবং মনে রাখার ক্ষমতা বাড়বে।

ইবাদতের মাধ্যমে মনোযোগ বৃদ্ধি করুনরমজান মাসে ইবাদত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই নির্দিষ্ট সময়ে কোরআন তেলাওয়াত করুন। এটি মানসিক প্রশান্তি এনে দেবে এবং পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াবে।

Advertisement

অতিরিক্ত রাত জাগা এড়িয়ে চলুনরাত জেগে বেশি পড়াশোনা করলে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে, তারাবির নামাজের পর অতিরিক্ত রাত জাগলে সকালে ক্লান্তি অনুভূত হবে। তাই নির্দিষ্ট সময় ঘুমানো উচিত, যেন সারাদিন মনোযোগ ধরে রাখা যায়।

সংক্ষিপ্ত নোট তৈরি করুনদীর্ঘ সময় ধরে মুখস্থ করার বদলে গুরুত্বপূর্ণ টপিকের সংক্ষিপ্ত নোট তৈরি করুন। অডিও বা ভিডিও লেকচারের মাধ্যমে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে পড়ার চাপ কমবে এবং বিষয়বস্তু সহজে মনে থাকবে।

পড়ার স্থান পরিবর্তন করুনএকই জায়গায় বসে দীর্ঘক্ষণ পড়লে একঘেয়েমি আসতে পারে। তাই মাঝে মাঝে স্থান পরিবর্তন করুন। বারান্দায়, ছাদে বা নিরিবিলি কোনো জায়গায় গিয়ে পড়তে পারেন। এতে মনোযোগও ফিরে আসবে।

নিজেকে মোটিভেটেড করুনরমজানে ক্লান্তির কারণে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। তাই নিজেকে সবসময় মোটিভেট করুন এবং ছোট ছোট টার্গেট সেট করুন। লক্ষ্য ঠিক রেখে পরিকল্পিতভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যান।

রমজানে সঠিক পরিকল্পনা ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে সিয়াম ও শিক্ষাজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা, ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই মাসকে আরও ফলপ্রসূ করা যায়। সঠিক কৌশল অনুসরণ করলে শিক্ষার্থীরা রমজানেও তাদের পড়াশোনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।

আরও পড়ুন কাছের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখবেন যেভাবে নিজের ফুলটিই যখন মাটিতে গড়ায়

কেএসকে/এএসএম