পুরো একমাস রোজা রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করবেন বিশ্বের সব মুসলিম। আর একদিন পরই শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতারের খাবারের প্রতি বিশেষ নজর রাখা খুবই জরুরি। কারণ রোজায় শরীর সুস্থ রাখার দিকেও আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।
Advertisement
রোজায় ইফতারে খাবারের উপর অনেকটাই নির্ভর করে সুস্থতা। ইফতারের সময় অনেকেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়, এমন খাবার খেয়ে ফেলেন। যার মধ্যে ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার, সোডা বা কোমল পানীয় অন্যতম। এসব খাবার পরবর্তী সময়ে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য সময় যে পরিমাণ খাবার খাওয়া হয়, রোজায় তার চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম খেতে হবে। বিশেষ করে সারাদিন রোজা রাখার পর আপনি ইফতারে কী কী খাবেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
তাই ইফতারের মেন্যুতে যেসব খাবার রাখলে আপনি পুরো রমজান সুস্থ থাকতে পারবেন। দেখে নিন সেসব-
Advertisement
রোজায় শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে, তাই ইফতারে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। এছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পানীয়ও খাওয়া যেতে পারে, যেমন- খেজুর ভেজানো পানি খেতে পারেন। এটি দ্রুত শক্তি দেয় এবং হজমে সহায়ক। ডাবের পানি রাখতে পারেন, এটিতে প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট থাকায় শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে। লেবুর শরবত, কমলার রস, অন্যান্য তাজা ফলের রস খেতে পারেন। যা আপনার শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন সরবরাহ করে এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। চিয়া সিড ভিজিয়ে খেতে পারেন। যা শরীরে হাইড্রেশন ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
খেজুরকমবেশি সবাই খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করেন, যা খুবই ভালো অভ্যাস। খেজুর সারাদিন রোজা রাখার পর একটি সুপার ফুড হিসেবে কাজ করে। এটি দ্রুত গ্লুকোজ সরবরাহ করে, যা শরীরে শক্তি ফিরিয়ে আনে। এটি ফাইবারযুক্ত, তাই হজমের জন্যও ভালো।
তাজা ফলমূলতাজা ফল শরীরে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। কিছু উপকারী ফল হলো- তরমুজ, বাঙ্গি, আপেল, কলা, পেঁপে, আঙুর, আনারস, পেয়ারাসহ মৌসুমি ফল রাখতে পারেন। এসব ফল আপনার শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক।আপেল, কলা প্রাকৃতিক চিনি এবং ফাইবার সরবরাহ করে এবং পেঁপে হজমে সহায়ক এবং শক্তি বাড়াবে।
স্বাস্থ্যকর প্রোটিনযুক্ত খাবারপ্রোটিন শক্তি ধরে রাখে এবং পেশি সুস্থ রাখে। ইফতারে কিছু স্বাস্থ্যকর প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখতে পারেন। যেমন- সিদ্ধ ডিম, গ্রিলড বা সিদ্ধ মুরগি, মাছ (গ্রিলড বা বেকড), দই ও ছানা।
Advertisement
শরীরে শক্তি বজায় রাখতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। ইফতারে আমরা বাঙালিরা কমবেশি সবাই একটি খুব সাধারণ খাবার রাখি সেটা হচ্ছে ছোলা। এতে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, প্রচুর ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রনসহ অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা রোজায় আপনার শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে। তবে অতিরিক্ত ঝাল, মসলা দিয়ে ছোলা রান্না করে না খেয়ে কাঁচা বা অল্প মশলায় রান্না করা ছোলা খেতে পারেন। এছাড়া রোজায় শরীরের শক্তি বজায় রাখতে খেতে পারেন ওটস।
বাদাম ও বীজজাতীয় খাবারবাদাম ও বীজ সুস্থ ফ্যাট, প্রোটিন ও ফাইবার সরবরাহ করে, যা দীর্ঘক্ষণ শরীরে শক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই ইফতারে কিছু উপকারী বাদাম রাখতে পারেন। যেমন-কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, চিয়া সিড, সূর্যমুখী ও তিসির বীজ।
দই ও লাবানদই হজমের জন্য উপকারী এবং এতে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা পেট সুস্থ রাখে। লাবান বা টক দইয়ের শরবত শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখে। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে অনেক খেয়েও পেটের গোলমাল ঠেকাতে দই খেতে পারেন। যা আপনার হজমে সহায়তা করবে এবং শরীর সতেজ রাখবে দীর্ঘসময়।
আরও পড়ুন কাছের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখবেন যেভাবে নিজের ফুলটিই যখন মাটিতে গড়ায়কেএসকে/জিকেএস