গত কয়েক বছর আবাহনী ছিল তারকা আর নামিদামি ক্রিকেটারে ঠাসা। লিটন দাস, নাইম শেখ, এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মাহমুদুল হাসান জয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাইফউদ্দীন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিব, খালেদ আহমেদ, রাকিবুল হাসান, তানভির ইসলামের মতো প্রতিষ্ঠিত পারফর্মাররা ২০২৪ সালে আকাশি-হলুদ জার্সিতে খেলেছেন।
Advertisement
এত বেশি জাতীয় দলের ক্রিকেটারে সাজানো আবাহনীর সঙ্গে শক্তিতে পেরে ওঠা কঠিন। কেউ তা পারেও নি। আবাহনীই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। মানে কাগজে-কলমে এক নম্বর দলই জিতেছিল প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের শিরোপা।
এবার আবাহনীর সেই রমরমা দিন নেই। মোসাদ্দেক, শান্ত আর রাকিবুল ছাড়া কেউ আবাহনীতে নেই। ছড়িয়ে পড়েছেন বিভিন্ন দলে।
আবাহনীর মতো ওত তারকার সমারোহ না ঘটলেও এবার কাগজে-কলমে দুটি দল বেশ সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। দল দুটি হলো- মোহামেডান ও লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এরপরের অবস্থান আবাহনী ও প্রাইম ব্যাংকের। দলবদলের পালা শেষে সর্বাধিক নামিদামি ক্রিকেটারের ঠিকানা এবার মোহামেডানে। দেশের ক্রিকেটের ৫ শীর্ষ তারকা ‘পঞ্চপাণ্ডব’- মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মধ্যে ৩ জনই এ দলে।
Advertisement
বলার অপেক্ষা রাখে না, বিপিএলের মতো প্রিমিয়ার লিগেও নেই মাশরাফি ও সাকিব। পঞ্চপাণ্ডবের বাকি ৩ তারকা তামিম, মুশফিক ও রিয়াদ মোহামেডানে। এ তিনজনই শেষ নয়। মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন, তাইজুল ইসলাম, নাসুম আহমেদও খেলবেন সাদা-কালো জার্সিতে।
সময়ের অন্যতম সেরা মিডল অর্ডার হৃদয় এবং গত লিগে দুর্দান্ত খেলা মাহিদুল ইসলাম অংকনও মোহামেডানে। সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত ওপেনার রনি তালুকদার, তিন কার্যকর অলরাউন্ডার সাইফউদ্দীন, আরিফুল হক, আবু হায়দার রনি ও পেসার মুশফিক হাসানও সাদা-কালো দলে।
সোনালি সময় ফেলে আসলেও তামিম এখনও দেশের এক নম্বর ওপেনার। মুশফিকের ব্যাট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগের মতো না হাসলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে সচল। মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতা দলের বিরাট পুঁজি। সাকিব ছাড়া দেশের এক নম্বর স্পিনিং অলরাউন্ডার মিরাজ, পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দীন ও দেশের এক নম্বর পেসার তাসকিন, দুই সেরা বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ও নাসুম; তিন বিভাগেই পারফর্মারদের ছড়াছড়ি।
একাধিক ক্রিকেটার ইনজুরিতে পড়লেও বড় ধরনের সমস্যা হবে না। জাতীয় দলের ডাকে ৩-৪ জন চলে গেলেও ব্যাকআপ পারফর্মার আছে মোহামেডানের। সব মিলে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে তারা বেশ ভারসাম্যপূর্ণ, পরিণত, সাজানো-গোছানো দল।
Advertisement
তবে যে অভিজ্ঞতা দলের সবচেয়ে বড় শক্তি, তারাই আবার মাইনাস পয়েন্ট মোহামেডানের। খেলা হবে মার্চ-এপ্রিলে। রোজার মধ্যেই প্রথম লিগের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ হয়ে যাবে। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ সহ কয়েকজনের রোজা রেখে খেলার অভ্যাস।
গরমে রোজা রেখে সারাদিন খেলা কঠিন, ক্লান্তি-অবসাদ গ্রাস করতে পারে। অভিজ্ঞ ও পয়ত্রিশ বছর পার হওয়া ক্রিকেটাররা দলকে কতটা দিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে।
বিপিএল চ্যাম্পিয়ন কোচ মিজানুর রহমান বাবুল এবারও মোহামেডানের ‘দ্রোণাচার্য’। দেখা যাক, দলটির সমন্বয়টা কেমন করেন বাবুল। যদি তা পারেন, তাহলে মোহামেডানকে আটকে রাখা কঠিন হবে। তাহলে হয়তো ২০০৮-২০০৯ মৌসুমের পর আবার প্রিমিয়ার ক্রিকেটের শিরোপা উঠবে মোহামেডানের হাতে।
এআরবি/এমএইচ/জিকেএস