রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শিগগির পরীক্ষামূলক চালু হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সেই লিখাচেভ।
Advertisement
তিনি জানান, প্রকল্পের ড্রাই রান চলছে, শিগগির টেস্ট রান শুরু হবে। রোসাটম নিরাপত্তা, গুণগতমান এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পের সফল সমাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রোসাটম মহাপরিচালক। এসময় তিনি এ তথ্য জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোসাটম মহাপরিচালককে জানান, বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তির উন্নয়ন ও পারস্পরিক স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আগ্রহী।
Advertisement
বৈঠকে মূলত বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প (আরএনপিপি) নিয়ে চলমান সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত।
আলোচনাকালে অধ্যাপক ড. ইউনূস রোসাটমের অব্যাহত সহযোগিতার প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে প্রকল্পের সঠিক সময়ে সম্পন্ন হওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রোসাটম মহাপরিচালক আলেক্সেই লিখাচেভ
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা আপনাদের সহায়তার ব্যাপারে আশাবাদী, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Advertisement
রোসাটমের মহাপরিচালক লিখাচেভ প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, নির্মাণকাজ পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের যে কোনো সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে পবিত্র।
লিখাচেভ আরও বলেন, প্রকল্পের ড্রাই রান চলছে, শিগগির টেস্ট রান শুরু হবে। তিনি আশ্বস্ত করেন যে রোসাটম নিরাপত্তা, গুণগতমান এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পের সফল সমাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দুই পক্ষ আন্তঃসরকারি ঋণ চুক্তি (আইজিসিএ) সংশোধনের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। যার আওতায় ঋণ ব্যবহারের সময়সীমা ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। এ বিষয়ে উভয় পক্ষ অচিরেই আইজিসিএর দ্বিতীয় প্রটোকল সই করতে সম্মত হন। এছাড়া প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি সফলতা নিশ্চিত করতে জনবল প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা প্রোটোকল ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান স্থানান্তরের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।
রাশিয়ার পক্ষে অংশ নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খোজিন, রাশিয়ার ফেডারেল এনভায়রনমেন্টাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সুপারভিশন সার্ভিসের ডেপুটি চেয়ারম্যান আলেক্সেই ফেরোপোন্তভ, রোসাটমের প্রথম উপ-মহাপরিচালক আন্দ্রে পেত্রোভ এবং রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও এএসই-জেএসির সহ-সভাপতি আলেক্সেই দেরি।
রোসাটমের মহাপরিচালক লিখাচেভ এক দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। এর আগে তিনি ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ সফর করেন।
এমইউ/কেএসআর/জিকেএস