মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই নির্দেশ আগামী মার্চ মাস থেকেই কার্যকর হবে। ফলে কানাডা, মেক্সিকো, ব্রাজিল এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের জন্য আর কোনো শুল্ক ছাড় থাকছে না।
Advertisement
নতুন এই শুল্কের কারণে মার্কিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশি দামে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করতে হবে। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং শেষ পর্যন্ত এটি পণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভিন্ন খাতে এই শুল্কের প্রভাব পড়বে, যার মধ্যে রয়েছে ক্যানজাত খাদ্য, পানীয়, গাড়ি, নির্মাণ শিল্প ও গৃহস্থালি সরঞ্জাম।
ক্যানজাত খাদ্য ও পানীয়র দাম বাড়ার শঙ্কাযুক্তরাষ্ট্রে ক্যান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ক্যান ম্যানুফ্যাকচারার্স ইনস্টিটিউট (সিএমআই) জানিয়েছে, খাদ্য ক্যান তৈরির জন্য ব্যবহৃত ৭০ শতাংশ ইস্পাত বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। নতুন শুল্কের ফলে ক্যানজাত খাদ্যের দাম বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
সংগঠনটির সভাপতি রবার্ট বাডওয়ে সতর্ক করে বলেন, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যনিরাপত্তা ও সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এছাড়া, অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কোকা-কোলা এবং অন্যান্য সফট ড্রিংকস ও বিয়ার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাড়তে পারে গাড়ির দাম২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের পর ফোর্ড ও জেনারেল মোটরস জানিয়েছিল, এতে উভয় কোম্পানির উৎপাদন খরচ ১০০ কোটি ডলার বেড়ে যাবে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান মর্নিংস্টার তখন অনুমান করেছিল, এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গাড়ির দাম গড়ে ৩০০ ডলার বাড়তে পারে। এবারও একই ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Advertisement
অন্যদিকে, ট্রাম্প যদি কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে গাড়ির দাম তিন হাজার ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে টিডি ইকোনমিকস।
নির্মাণ খাত ও গৃহস্থালি সরঞ্জামে প্রভাবনির্মাণ শিল্পে ইস্পাতের ব্যবহার ব্যাপক। ভবনের ফ্রেম থেকে শুরু করে গৃহস্থালি সরঞ্জাম পর্যন্ত বহু জায়গায় ইস্পাতের পণ্য ব্যবহৃত হয়। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব হোম বিল্ডার্স জানিয়েছে, নতুন শুল্কের ফলে আবাসন ব্যয় বেড়ে যাবে এবং তাতে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
সংস্থাটির চেয়ারম্যান কার্ল হ্যারিস বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি আবাসন খাতকে আরও সাশ্রয়ী করতে চান, তবে এই শুল্কনীতি তার উল্টো প্রভাব ফেলবে।
২০১৮ সালে ইস্পাতের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে গৃহস্থালি সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হুইরলপুল জানিয়েছিল, তাদের ইস্পাতের খরচ ৩৫ কোটি ডলারের বেশি বেড়েছে। ফলে এবারও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ ও অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসিকেএএ/