জাতীয়

দাবি পূরণের আশ্বাসে গভীর রাতে যমুনার সড়ক ছাড়লেন আহতরা

দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় রাজধানীর মিন্টো রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়ার পর দাবি পূরণের আশ্বাসের ভিত্তিতে গভীর রাতে হাসপাতালে ফিরে গেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।

Advertisement

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টার দিকে আন্দোলনকারী আহতরা যমুনার সামনে থেকে চলে যান। এর আগে সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ সাত দাবিতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রাত ১২টার পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে গিয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।

যমুনার অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আহতরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

যমুনার সামনে আহতদের অবস্থান ও ক্ষোভ প্রকাশ

Advertisement

রাত পৌনে ২টার দিকে যমুনার সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, আহতদের দাবিগুলোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। আহতদের দাবি অন্য কোনো সরকার নয়, অন্তর্বর্তী সরকারই পূরণ করবে। তার এ আশ্বাসের পর আহতরা যমুনার সামনের সড়ক ছেড়ে চলে যান।

সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ সাত দাবিতে শনিবার রাত থেকে বিক্ষোভ করছেন জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা।

আরও পড়ুন

মধ্যরাতে ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে আহতরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা, পুলিশের বাধা সারজিসের আশ্বাসে সড়ক ছাড়লেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা

রোববার তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর শিশুমেলা সড়কে অবস্থান নেন। পরে তারা সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর ইন্টারকন্টিনেন্টানের সামনে ভিআইপি সড়কে পৌঁছালে পদযাত্রাটি পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এসময় সেখানেই বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা।

Advertisement

মধ্যরাতে ভিআইপি সড়কের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন আহতরা

সেখানে সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান নিয়ে ১২টার পর তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।

যমুনার সামনে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শনিবার রাত থেকে তারা সড়কে অবস্থান নিলেও সরকারের দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করা তো দূরের কথা, সামান্য সহানুভূতিও জানাননি। অথচ মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছে এই সরকার।

গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনে আহতরা। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা এই সরকারকে প্রশ্ন করছি, আপনারা বলেন, আপনারা আমাদের জন্য কী করেছেন? আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে অবস্থান করবো।

যমুনার সামনে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

এর আগে উন্নত চিকিৎসা ও হাসপাতালে ভালো মানের খাবারের দাবিতে গত ২ জানুয়ারি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহতরা শাহবাগ থেকে ফার্মগেটমুখী সড়ক অবরোধ করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের আশ্বাসে তারা সড়ক থেকে সরে যান।

আরও পড়ুন

পঙ্গু হাসপাতালের সামনে সড়ক অবরোধ করেছেন আহতরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করতে গিয়ে তোপের মুখে হাসনাত আশ্বাসে সড়ক ছাড়বেন না জানিয়ে সরকারকে আলটিমেটাম

আহতদের ৭ দাবি১. ২৪ এর যোদ্ধাদের মধ্যে আহত এবং শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার।

২. ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণপূর্বক গ্রেফতার।

৩. আহতদের কেটাগরী সঠিকভাবে প্রণয়ন।

৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।

৫. আহতদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. আহত এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের অঙ্ক বৃদ্ধিসহ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার বিষয়টা সুসংহত করতে হবে।

এমকেআর