ধর্ম

মসজিদ রেখে ইজতেমার মাঠে জুমা আদায়; ইসলাম কী বলে?

জুমা অর্থ সম্মিলন বা জমায়েত। জুমা শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো কিছু সংখ্যাক মানুষের জমায়েত। কিছু সংখ্যাক মানুষ একসাথে জামাতবদ্ধ হয়েই জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ একা আদায় করা গেলেও জুমার নামাজ একা আদায় করা যায় না। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় জুমার নামাজ কোনো জামে মসজিদে আদায় করাই বাঞ্চনীয়।

Advertisement

তবে কখনও যদি বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়, যেমন কোনো বড় ইজতেমা, সমাবেশ বা মাহফিলে যদি বহু সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়, যাদের জুমা আদায় করার মতো জায়গা আশপাশের জামে মসজিদগুলোতে নেই, তাহলে তারা জুমার শর্তগুলো পূরণ করে সমাবেশস্থলে বা কোনো মাঠেও জুমার নামাজ আদায় করতে পারেন।

আমাদের দেশে প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমায় টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিপুল সংখ্যক মানুষ জমায়েত হন। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের পক্ষে আশপাশের কোনো জামে মসজিদে জুমা আদায় করা অসম্ভব। তাই জুমার সব শর্ত পূরণ করে ইজতেমার মাঠেই জুমা আদায় করা হয়। মসজিদ রেখে বিশ্ব ইজতেমার মাঠে এই জুমা আদায় ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ বা অপছন্দনীয় নয়।

যে সব শর্ত পূরণ করলে জুমা শুদ্ধ হয় ১. জুমার সময় হওয়া

জুমার নামাজ আদায়ের নির্ধারিত সময় হলো জুমার দিনের জোহরের সময়। জুমার দিন জোহরের সময়ের মধ্যেই জুমা আদায় করতে হবে।

Advertisement

২. জুমার আগে খুতবা দেওয়া

নামাজের আগে খুতবা দেওয়া জুমা শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত। খুতবা ছাড়া জুমা শুদ্ধ হয় না। জুমার খুতবায় আল্লাহর প্রশংসা করা হয়, শরিয়তের বিধি বিধান বর্ণনা করা হয় এবং নবিজি (সা.), তার সাহাবায়ে কেরাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করা হয়।

৩. জামাতবদ্ধ হয়ে জুমা আদায় করা

এই শর্তটির কথা আগেই উল্লেখ করেছি। জুমা শুদ্ধ হওয়ার জন্য জামাত অত্যাবশ্যক এ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই। তবে জামাত কত বড় হতে হবে এ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। ইমাম আবু হানিফার (রহ.) মতে ইমাম ছাড়া কমপক্ষে তিনজন মুসল্লি থাকলে জুমা শুদ্ধ হবে। ইমাম মালেকের (রহ.) মতে জুমা শুদ্ধ হওয়ার জন্য ইমামের সাথে কমপক্ষে বারোজন পুরুষ মুসল্লি থাকতে হবে। ইমাম শাফেঈ ও আহমদের (রহ,) মতে জুমা শুদ্ধ হওয়ার জন্য কমপক্ষে চল্লিশজন মুসল্লি থাকতে হবে। চল্লিশজনের জামাত ছাড়া জুমা শুদ্ধ হবে না।

৪. জুমার জামাত সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়া

জুমার জামাত সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়া জুমা শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত। এ কারণে সবার জন্য উন্মুক্ত নয় এমন জায়গায় জুমা শুদ্ধ হয় না। যেমন জেলখানা মসজিদ, অফিসের নামাজ ঘর, কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য বিশেষায়িত মসজিদ ইত্যাদি।

ওএফএফ/এমএস

Advertisement