ধর্ম

ঋণ করে সন্তানের আকিকা; ইসলাম কী বলে?

সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আল্লাহর শোকর ও আনন্দ প্রকাশের অংশ হিসেবে আাকিকা করা মুস্তাহাব। রাসুল (সা.) একটি ছাগল জবাই করে তার নাতি হাসানের (রা.) আকিকা করেছিলেন। (সুনানে তিরমিজি) উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) পুত্র সন্তানের জন্য দুটি ও কন্য সন্তানের জন্য একটি পশু আকিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি) হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইহুদিরা পুত্রসন্তানের আকিকা করত কিন্তু কন্যাসন্তানের আকিকা করত না। তোমরা পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং কন্যাসন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে হলেও আকিকা করো। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি)

Advertisement

তবে মনে রাখা উচিত, আকিকা করা ওয়াজিব বা অপরিহার্য কোনো আমল নয়, বরং মুস্তাহাব আমল। সামর্থ্য থাকলে আকিকা করা উচিত। সামর্থ্য না থাকলে ঋণ করে সন্তানের আকিকা করার প্রয়োজন নেই। বিশেষত ঋণ করে আকিকা করলে যদি ওই ঋণ শোধ করা কষ্টকর হয়ে পড়ার আশংকা থাকে, তাহলে কোনোভাবেই আকিকার জন্য ঋণ করা উচিত নয়।

ঋণ অনেক বড় মসিবত। ঋণভারে জর্জরিত থাকলে মানুষের কটুকথা শুনতে হয়, মানুষের কাছে ছোট হয়ে থাকতে হয়। জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে। দুনিয়ার কাজকর্ম যেমন ঠিকভাবে করা যায় না, শরিয়তের নির্ধারিত কর্তব্যগুলোও ঠিকভাবে পালন করা যায় না, আল্লাহর ইবাদতেও মন লাগে না। রাসুল (সা.) ঋণের বোঝা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়েছেন। রাসুল (সা.) দোয়া করতেন,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ

Advertisement

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল-হাম্মি ওয়াল-হুযনি ওয়া আউযুবিকা মিন গালাবাতিদ-দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি চাই। আশ্রয় চাই অপারগতা ও অলসতা এবং কৃপণতা ও কাপুরুষতা থেকে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের কঠোরতা থেকে। (সুনানে আবু দাউদ)

শিশু জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিন আকিকা করা মুস্তাহাব হলেও সপ্তম দিন না পারলে চৌদ্দতম দিন, সেই তারিখেও অক্ষম হলে একুশতম দিন বা পরবর্তী যে কোনো দিন আকিকা করা যায়। তাই সপ্তম দিন না পারলে পরবর্তীতে যখন আল্লাহ তাআলা সামর্থ্য দান করেন, তখন আকিকা করার নিয়ত করা যেতে পারে।

ওএফএফ/জিকেএস

Advertisement