দেশজুড়ে

নওগাঁয় ধানের ৫ জাতের চারটিই কৃষকের হাতে নেই

নওগাঁর হাট-বাজারে সব ধরনের ধানের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। গত এক মাসের ব্যবধানে বাজারগুলোতে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকের তুলনায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। যার প্রভাবে সরবরাহ সংকটে প্রায়ই টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে ধানের বাজারদরে। বিষয়টিকে ‘সিন্ডিকেট’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে খুব শিগগির মজুতবিরোধী অভিযানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার চকগৌরী হাটে দেখা যায়, মানভেদে প্রতিমণ স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১ হাজার ৪৪০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা, শুভলতা ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ব্রিধান-৪৯ ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫৪০ টাকা, জিরাশাইল ১ হাজার ৮৭০ টাকা থেকে ১ হাজার ৯২০ টাকা, সম্পা কাটারি ১ হাজার ৭৬০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮৭০ টাকা এবং হাইব্রিড ১ হাজার ৩৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে বেচাকেনা হচ্ছে। এক মাস আগে এই হাটে মানভেদে প্রতিমণ স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১ হাজার ৪৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, সুভলতা ১ হাজার ৬৬০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭১০ টাকা, ব্রিধান-৪৯ ১ হাজার ৫৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫৯০ টাকা, জিরাশাইল ১ হাজার ৬৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭২০ টাকা, সম্পা কাটারী ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭৬০ টাকা এবং হাইব্রিড ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা মণ দরে বেচাকেনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির কারণে কুষ্টিয়া মোকামে চালের দাম বাড়ছে

মহাদেবপুর উপজেলার ভিমপুর ইউনিয়নের পাটনা গ্রাম থেকে চকগৌরী হাটে ধান বিক্রি করতে এসেছেন কৃষক আব্দুস সালাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে বেচাকেনা হওয়া স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ছাড়া বাকি চারটি জাতের ধানের কোনোটিই কৃষকের হাতে নেই। মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্ন ফড়িয়া ব্যবসায়ী ও মজুতদাররা ধান কিনে রেখেছেন। তারাই এখন ওসব ধান বাজারে এনে চড়া দামে বিক্রি করছেন। এ সিন্ডিকেটের কারণে কখনোই কৃষকরা ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় না।’

বাজারে ধান কিনতে আসা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘স্বর্ণা-৫ ছাড়া বাকি চারটি জাতের ধানের প্রায় প্রত্যেকেটির অযৌক্তিক দাম হাঁকছেন মজুতদাররা। ভ্যান ও ভটভটিতে করে প্রতি হাটে অল্প অল্প করে ধান এনে বিক্রি করে তারা সটকে পড়েন। বিগত বছরগুলোতে কখনোই এদের কাউকে ধানের ব্যবসায় দেখা যায়নি।’

Advertisement

নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল গ্রামের ভাই ভাই ট্রেডার্সের আড়তদার আলতাফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে জিরাশাইল ধান একেবারে নেই বললেই চলে। সরবরাহ সংকটে গত এক মাসের ব্যবধানে এই ধানের দাম প্রতিমণে অন্তত ২০০ টাকা করে বেড়েছে। বেশিরভাগ ধানের দামই অযৌক্তিকভাবে বেড়েছে।’

আরও পড়ুন: ভিয়েতনাম থেকে চাল, মরক্কো থেকে আসবে সারসুগন্ধি চাল রপ্তানিতে উঠছে নিষেধাজ্ঞা

তিনি বলেন, অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান শুরু না হলে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে চালের বাজার অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকবে। তাই প্রশাসনকে দ্রুত মজুতবিরোধী অভিযানে নামার অনুরোধ জানান এ ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল ও সম্পা কাটারী জাতের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে।

তিনি বলেন, চালের দাম কমতে থাকায় মজুতবিরোধী অভিযান কিছুটা ধীরগতিতে চলছিল। অবৈধ মজুত করে বাজারে আবারও কেউ অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে জোরালো অভিযান পরিচালনা করা হবে। অবৈধ মজুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

এসআর/জেআইএম