হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী কারিমা খাতুন। এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় (এমবিবিএস) বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। হতদরিদ্র বাবার একমাত্র মেয়ে কারিমার এমন সাফল্যে খুশির জোয়ারে ভাসছে এলাকাবাসী।
Advertisement
কারিমা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের আব্দুল করিম মন্ডলের মেয়ে। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ৭৮ নম্বর নিয়ে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২১ সালে দুর্গাপুর উপজেলার বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২৩ সালে রাজশাহী শাহ মখদুম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ- ৫ পান তিনি।
কারিমার বাবা আব্দুল করিম মন্ডল বলেন, আমার দুটি সন্তান এক মেয়ে ও এক ছেলে। ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারে না। ছেলেটিও এইচএসসি পাস করেছে। আমি একজন দরিদ্র মানুষ, দিন এনে দিন খাই। পরের জমিতে কামলা দিই। খুব কষ্ট করে আমার সংসার চালাতে হয়। তারপরও আমার দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাতে কমতি রাখিনি।
করিম মন্ডল আরও বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানি এবং আমার সন্তানদের শিক্ষকদের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা। আমার মেয়েটা অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। মেয়ে যেন বড় ডাক্তার হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।
Advertisement
কারিমা খাতুন বলেন, বাবা পেশায় দিনমজুর হলেও কখনো লজ্জাবোধ করি না। নিজেকে ছোট ভাবি না। কারণ বাবা সৎভাবে কাজ করে টাকা উপার্জন করে। আমরা দুই ভাই-বোন। আমি ছোট ভাই বড়। ভাই ডিএমডি রোগে আক্রান্ত, হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারে না। এই রোগের চিকিৎসা এখনো আসেনি। তারপরও ভাই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন।
কারিমা বলেন, আমি একজন ভালো ডাক্তার হতে চাই। সবার পাশে থাকতে চাই। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। প্রতিবন্ধী ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে চাই।
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজাদ রেজাইল করিম বলেন, কারিমা মেডিকেলে চান্স পাওয়ার কারণে আমরা অনেক খুশি। সে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা একজন দিনমজুর। মানুষের কাজ করে তার বাবা সংসার চালান এবং ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া করান। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে দোয়া করি কারিমা যেন বড় ডাক্তার হতে পারে এবং এলাকাবাসীসহ দেশবাসীর সেবা করতে পারে।
সাখাওয়াত হোসেন/এফএ/এএসএম
Advertisement