স্বপ্ন পূরণ হয়নি প্রায় সোয়া লাখ শিক্ষার্থীর। মেডিকেল ভর্তিপরীক্ষার ফলাফল হতাশ করেছে তাদের। আশৈশব যারা দেখেছেন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন, তাদের জন্য এই সময়টা কঠিন, হতে পারে হতাশাজনকও। তবে ডাক্তার হওয়ার সব আশা এখানেই শেষ নয়। কষ্টকর প্রস্তুতির পর যখন প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল আসে না, তখন মনে হতে পারে যে, সবকিছু বুঝি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মনে রাখা উচিত, হতাশা মোকাবিলা করার পথ আছে এবং সেই পথে হেঁটেও আপনি আলোকিত ভবিষ্যতে পৌঁছাতে পারবেন।
Advertisement
১. পরাজিত হোন, হতাশ হবেন না: এ অবস্থায় হতাশ অনুভূতি হবে, স্বাভাবিক। কিন্তু হতাশ হবেন না। পরাজয় জীবনের অংশ, কিন্তু হতাশাকে মনের ঘরে ঠাঁই দেবেন না। হতাশা, অক্ষমতার মতো আবেগকে পাত্তা না দিয়ে পরের ধাপে এগিয়ে যান। এমনকি অন্যের তীর্যক কথার ভয়ে কুঁকড়ে যাবেন না। তাহলেই আপনি দ্রুত হতাশা থেকে বের হয়ে নতুন জীবন নিয়ে ভাবতে পারবেন।
২. ব্যর্থতাকে শিক্ষা হিসেবে দেখুন: একটি ব্যর্থতা কখনই আপনার পরিচয় নয়। বরং বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি একটি শিক্ষা হতে পারে। মনে রাখবেন, যে ডাক্তাররা আজ সফল, তাদের অনেকেই প্রথমবারই সফল হননি। উইনস্টন চার্চিল বলেছেন, ‘সাফল্যই শেষ কথা নয়, ব্যর্থতাও মারাত্মক নয়। এগিয়ে যাওয়ার সাহসই গুরুত্বপূর্ণ।’
৩. সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না: একা একা লড়াই না করে আপনার কাছের বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করুন। এক একজন মানুষের মানসিক পরিস্থিতি এক এক রকম হয়। তাই প্রত্যেকের মানিয়ে নেওয়ার পদ্ধতিও আলাদা। কঠিন মুহূর্ত মোকাবেলায় কাছের মানুষ বা পেশাদার কারো সহায়তা নেওয়া দুর্বলতা নয়।
Advertisement
‘সাফল্যই শেষ কথা নয়, ব্যর্থতাও মারাত্মক নয়: এগিয়ে যাওয়ার সাহসই গুরুত্বপূর্ণ’ - উইনস্টন এস. চার্চিল
৪. ‘রিস্টার্ট’: বলিউডের সুপাহিট সিনেমা ‘টুয়েভথ্ ফেল’ এর মতো করে বলুন ‘রিস্টার্ট’! এ পদ্ধতিতে কাজ না করে থাকলে ভিন্ন পদ্ধতিতে আবার চেষ্টা করতে পারেন পরের বছর। অথবা নতুন করে পরিকল্পনা করতে পারেন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আগের প্রস্তুতির সময় কোন জায়গায় দুর্বলতা ছিল, সেটি নির্ণয় করে পরিকল্পনা পরিবর্তন করুন। নতুন বই, উপকরণ বা কোচিং ক্লাসের কথা ভাবুন।
আরও পড়ুন:
পরীক্ষার আগের রাতের চেকলিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় নির্ধারণ করবেন কীভাবে দেখে নিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষার দিনক্ষণ৫. অন্যদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলুন: ভর্তিপরীক্ষায় যারা সফল হয়েছেন এবং যারা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের অভিজ্ঞতা জেনে নিন। আপনার মতো পরিস্থিতিতে থাকা বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের পরিকল্পনা শেয়ার করলে আরও সাহস পাবেন এবং তারাও আপনাকে উৎসাহিত করবে।
Advertisement
৬. একটু বিরতি নিন: অতিরিক্ত হতাশাকে ব্যস্ততা দিয়ে ঢেকে ফেলবেন না। কঠিন পরিস্থিতিতে একটু বিরতি নিন, নিজেকে কয়েক দিন সময় দিন স্বাভাবিক হওয়ার জন্য।
৭. সফলদের পাঠ পরিকল্পনা জানুন: এ বছর ও বিগত বছরগুলোতে মেডিকেলে যারা সফল হয়েছেন, তাদের অভিজ্ঞতার গল্প ইন্টারনেট ঘাটলেই পেয়ে যাবেন। পড়ে বা দেখে নিন, সেটাও আপনার জন্য হতে পারে অনুপ্রেরণা।
সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৭২ জন। পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী আজ আপনার সঙ্গে একইরকম একটি মন খারাপের দিন পার করছে। নিজেকে শক্ত রেখে সামনের দিকে মনোযোগ দিলে আপনিও সফল হবেন। প্রয়োজন শুধু একটু ধৈর্য, পরিকল্পনা আর নব উদ্যোমে পরিশ্রম।
আরও পড়ুন:
নিজেদের প্রস্তুত করলে কাজের অভাব নেই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষার তারিখ উন্নয়ন অধ্যয়নে ছাত্রাবস্থায় মেলে খণ্ডকালীন ভালো চাকরিএএমপি/আরএমডি/এমএস