আন্তর্জাতিক

প্রথম দিনেই অভিবাসীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করবেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই অভিবাসীদের ওপর কঠোর হবেন- এমন আভাস আগেই পাওয়া গিয়েছিল। আর আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেওয়ার একদিন আগে রোববার (১৯ জানুয়ারি) ওয়াশিংটনে এক সমাবেশে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনব্যবস্থার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করবেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ও দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন। খবর বিবিসি, রয়টার্স।

Advertisement

ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনাতে আয়োজিত ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ বিজয় সমাবেশে সমবেত জনতার উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, কাল সূর্যাস্তের সময় থেকে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ থেমে যাবে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প শুরু থেকেই বলে আসছেন যে, তিনি অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে তৎপরতা শুরু করবেন। তার এমন পদক্ষেপের কারণে লাখ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে। তবে তিনি যেভাবে চাচ্ছেন সেভাবে অভিবাসনবিরোধী অভিযান চালাতে গেলে কয়েক বছর লেগে যাবে এবং খরচও অনেক বেশি হবে।

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির পর এটা ওয়াশিংটনে দেওয়া ট্রাম্পের প্রথম বড় ভাষণ। সে বছর ট্রাম্পের ভাষণের পর তার সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। এবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত দেড় হাজারের বেশি মানুষকে ক্ষমা করে দেবেন।

সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক আন্দোলন। ৭৫ দিন আগে আমরা ঐতিহাসিক রাজনৈতিক বিজয় অর্জন করেছি। আমাদের দেশ কখনো এমনটা দেখেনি। আগামীকাল থেকে আমি ঐতিহাসিক শক্তি প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নেব এবং আমাদের দেশের প্রতিটি সংকটের সমাধান করবো।

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশের ঝড় তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তিনি তার আসন্ন চার বছরের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।

তিনি নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়াসহ পরিবেশ রক্ষায় নিয়মের কড়াকড়ি কমানো এবং ডাইভারসিটি প্রোগ্রাম বন্ধ করার মতো বড় বড় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই ট্রাম্প দুই শতাধিক নির্বাহী পদক্ষেপে স্বাক্ষর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাহী আদেশ, যা আইনত বাধ্যতামূলক হবে। বাইডেন প্রশাসনের প্রতিটি উগ্র ও উদ্ভট নির্বাহী আদেশ শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নত করা, সরকারের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি বিভাগ গঠন করা (ডোজ), জন এফ কেনেডির হত্যা সম্পর্কিত রেকর্ড প্রকাশ করা, সামরিক বাহিনীকে আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া এবং সেনাবাহিনী থেকে বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তি নীতি বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ, বিশ্বে এর প্রভাব কেমন হতে পারে? যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ আজ

এছাড়া ট্রান্সজেন্ডার নারীদের ‘নারী’ ক্রীড়া বিভাগে প্রতিযোগিতা বন্ধ করা এবং আমেরিকার রাজ্যগুলোর হাতে শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার কথাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টরা সাধারণত দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাহী আদেশ জারি করেন। তবে ট্রাম্পের প্রথম দিনের আদেশের সংখ্যা তার পূর্বসূরিদের তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে এবং এর অনেকগুলো আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Advertisement

টিটিএন