অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে পাঠানো চিঠির জবাব এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
Advertisement
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের কনফারেন্স কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দেওয়া চিঠির বিষয়ে কোনো জবাব এখনো দেয়নি ভারত। না দিলেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটার জবাব ভারত দেয়নি। বাংলাদেশ সরকার অপেক্ষায় আছে, দেখা যাক তারা জবাব দেয় কি না। না দিলে বিচার প্রক্রিয়া তার নিজস্ব প্রক্রিয়া অনুস্মরণ করে চলবে।
যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বা নীতিনির্ধারকরা বেশ কিছুদিন ধরেই আকারে ইঙ্গিতে বা খোলাখুলি বলে আসছিলেন, ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবেন তারা। যাতে তাকে ‘গণহত্যার’ জন্য বিচারের কাঠগড়ায় তোলা যায়।
Advertisement
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গত ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর পিলখানার বিজিবি সদরদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এসময় তিনি বলেন, এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। (তাকে) এক্সট্রাডিশন (প্রত্যর্পণ) করার জন্য, এটি প্রক্রিয়াধীন। কোন উপায়ে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালান শেখ হাসিনা। তার আগে-পরে পালান সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তার দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও।
ওই অভ্যুত্থান দমনে ব্যাপক বলপ্রয়োগ করে শেখ হাসিনার সরকার। এতে সরকারি হিসাবেই প্রায় ৮ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আর আন্দোলনকারীদের হিসাবে এ সংখ্যা দেড় সহস্রাধিক।
Advertisement
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার শেখ হাসিনাসহ অভ্যুত্থানে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচার করতে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে। এরই মধ্যে সেই ট্রাইব্যুনালে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে।
সরকারের উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অনেক আগে থেকে বলে আসছেন, এসব মামলায় বিচারের জন্য ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে।
এফএইচ/এমএএইচ/জেআইএম