জাতীয়

হাজারীবাগে চাঁদাবাজির ঘটনায় মূলহোতা হৃদয় গ্রেফতার

রাজধানীর হাজারীবাগে চাঁদাবাজির ঘটনায় চাঁদাবাজ গ্রুপের মূলহোতা এনামুল হক হৃদয়কে (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, হাজারীবাগ থানায় গত ১২ জানুয়ারি রুজু করা চাঞ্চল্যকর চাঁদাবাজির মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ দলের মূলহোতা এনামুল হক হৃদয়কে শনাক্ত করে পুলিশ।

এরপর শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের কালকিনি থানার কালকিনি বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মামলা রুজুর পরের দিন গত ১৩ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাজারীবাগের রায়েরবাজার এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ দলের অন্যতম সদস্য মো. রাতুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছিল হাজারীবাগ থানা পুলিশ ও ডিবি-রমনা বিভাগ।

Advertisement

হাজারীবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার এনামুল হক হৃদয় গত ১০ জানুয়ারি মোটরসাইকেল যোগে এসে অগ্নিসংযোগ ও গুলির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে নিজে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ঘটনাস্থলে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ও ফাঁকা গুলি করেছে বলে স্বীকার করেছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও তাকে অস্ত্র হাতে গুলি করতে দেখা গেছে।

সেবা হোল্ডিং লিমিটেডের নিরাপত্তা প্রহরী গোলাম কিবরিয়া খান (৪৯) হাজারীবাগ থানায় গত ১২ জানুয়ারি তার প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর চাঁদা দাবির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ১৫/২০ জনের একটি দুষ্কৃতকারী দল আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ৭/৮টি মোটরসাইকেলে করে হাজারীবাগের রোড নম্বর-৭/এ এর ধানমন্ডির ৩ নম্বর হোল্ডিংয়ে নির্মাণাধীন ভবনের টিনের বেষ্টনীর ভেতর প্রবেশ করার চেষ্টা করে।

ওই এলাকায় দায়িত্বরত হাজারীবাগ থানা পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিক বাধা দেওয়ার কারণে তারা ভবনের সামনে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে ভবনের নিরাপত্তা বেষ্টনী পুড়িয়ে দেয়। এসময় দায়িত্বরত পুলিশ দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করলে তারা তাদের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ৭/৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়।

Advertisement

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর ওই ভবনে প্রবেশ করে এ সন্ত্রাসী দল মামলার বাদী গোলাম কিবরিয়া খানসহ নির্মাণশ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য বলে এবং তাকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে ভবনের মালিককে সেই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলে।

হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একইভাবে ৫ জানুয়ারিও এ সন্ত্রাসী দলের দুজন সদস্য সেবা হোল্ডিং লিমিটেডের নির্মাণাধীন ভবনটিতে গিয়ে নির্মাণশ্রমিকদের নির্মাণকাজ বন্ধ করে চলে যেতে বলে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য তাদের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।

এসময় ভবন নির্মাণকাজ চালু রাখতে হলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে জানায়। এছাড়া আশপাশের আরও কয়েকটি নির্মাণাধীন প্রজেক্টের ম্যানেজারদের ফোন করে চাঁদা দাবি করে এ সন্ত্রাসী গ্রুপটি।

গ্রেফতার এনামুল হক হৃদয়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মামলার সুষ্ঠু-তদন্ত ও পলাতকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ডিএমপির এ কর্মকর্তা।

টিটি/এমএএইচ/এএসএম