কোন বিষয়ে বিএসসি করতে চান? এই প্রশ্নের উত্তরের তালিকায় এখন সবার ওপরে অবস্থান করছে সিএসই বা কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং। কিন্তু কেন? এটি কি আপনার জন্য সঠিক পছন্দ?
Advertisement
যেসব বিষয়ে আজ আমরা স্মার্টফোন থেকে শুরু করে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের (এআই) ওপর নির্ভর করি, তা হয়তো ১০ বছর আগে অনেকেই ভাবিনি। স্মার্টফোন ছাড়া প্রতিদিন জীবনের অনেক কিছুই কয়েক গুণ কঠিন হয়ে পড়বে। বিশ্ব প্রতিদিন আগের চেয়ে একটু করে বেশি কম্পিউটার-নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। তাই ব্যবহারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ।
এ কাজের ক্ষেত্রও আবার চরমভাবে বিস্তৃত। অনেকেই হয়তো মনে করেন, সিএসইর প্রধান কাজ প্রোগামিং। কিন্তু প্রোগামিং ছাড়াও বিচিত্র কাজের ক্ষেত্র আছে একজন বিএসসি ইন সিএসই শিক্ষার্থীর।
কোথায় পড়বেন?বর্তমানে বাংলাদেশে ইউজিসি অনুমোদিত প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এ বিষয়ে ভর্তির সুযোগ আছে:> বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > শাহজালাল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়> নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় > বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়> ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়> জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়> রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়> খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়> জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়> আহসানউল্লাহ্ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়> ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি> নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি> ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি> আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ> ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি> ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি> গ্রিন ইউনিভার্সিটি> সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি।
Advertisement
বর্তমানে যে কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই আইটি সেক্টর আছে। সেখানে আছে সিএসই পাস শিক্ষার্থীর কাজের সুযোগ।১. বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোতে প্রোগ্রামার, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে বিভিন্ন আইটি সংক্রান্ত পদ আছে।২. দেশের বাইরে গুগল, মেটা, আমাজন, মাইক্রোসফট, সিসকোসহ বিভিন্ন টেক জায়ান্ট কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ আছে। ৩. একাডেমিক রেজাল্ট ভালো করে শিক্ষকতার সুযোগ তো আছেই।৪. কেউ যদি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে উদ্যোক্তা হতে চান, সেখানেও অনেক সম্ভাবনার দরজা খোলা আছে।৫. আছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণার সুযোগ।৬. কম্পিউটার ফার্মে ডেভেলপার হিসেবে যোগদান করার সুযোগ আছে। ৭. সরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রেও কম্পিউটার প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।৮. সফটওয়্যার ডেভেলপার, ওয়েব ডেভেলপার, আইটি ম্যানেজার, কম্পিউটার প্রোগ্রামার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, কম্পিউটার সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, কম্পিউটার সিস্টেম অ্যানালিস্ট, ইনফরমেশন সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট, ডাটাবেজ অ্যাডমিন নামক পদগুলোতে কম্পিউটার প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেওয়া হয়।৯. প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেল খোলা হয়েছে। সেখানেও সুযোগ আছে।১০. অনেক বড় বড় আউটসোর্সিং কোম্পানি আছে, যাদের প্রোগ্রামাররা কয়েক মাস পরপরই তাদের স্ট্যাক চেঞ্জ করেন। ১১. রিসার্চার বা গবেষক পদটি আমাদের দেশের কোম্পানিগুলোতে তেমন একটা দেখা না গেলেও বাইরের দেশের খুব বড় মাপের কোম্পানিগুলোতে থাকে। রিসার্চাররা হয়ে থাকেন চূড়ান্ত দক্ষ প্রোগ্রামার বা প্রবলেম সলভার। তাদের কাজ প্রোডাক্টের পারফরমেন্স বাড়ানো, ইফিসিয়েন্সি বাড়ানো, সিকিউরিটি বাড়ানো ইত্যাদি।১২. কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স ইঞ্জিনিয়ারের (QA Engineer) কাজ হচ্ছে ডেভেলপ করা সফটওয়্যার বা সিস্টেমের কোয়ালিটি পরীক্ষা করা।১৩. ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইনারের (UI Designer) চাহিদা সব ফার্মেই থাকে। ১৪. আইটি সাপোর্ট এক্সিকিউটিভ নামের একটি পদ প্রায় সব সফটওয়্যার ফার্মেই থাকে। এর কাজ হচ্ছে কোম্পানির ক্লায়েন্টদের যে কোনো সমস্যায় সাপোর্ট দেওয়া।১৫. অসংখ্য পত্রিকা, ওয়েব পোর্টাল, ব্লগ বা টেকনোলজি সাইট আছে। জায়গাগুলোতে টেকনোলজি নিয়ে লিখে ও রিভিউ দিয়েও বর্তমানে ভালো অঙ্কের আয় করা সম্ভব। যারা বিভিন্ন গ্যাজেট এক্সপ্লোর করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি ভালো একটি পেশা হতে পারে।১৬. ব্যাংকসহ সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই কম্পিউটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট বা আইটির জনবল প্রয়োজন হয়। ব্যাংকের ডেটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, তাদের ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মেইনটেনেন্সের জন্যও প্রয়োজন দক্ষ জনবল।
কাজের যেমন অনেক সুযোগ আছে; তেমনই এ বিষয়ে পড়াশোনা ও দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রও বিশাল। কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়তে হলে গণিত, যুক্তি ইত্যাদি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়তে হলে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হলো লেগে থাকার অভ্যাস আর ধৈর্য।
আরও পড়ুন ‘ডেটা সায়েন্স’ কি সত্যিই সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন বিষয় বিবিএ পড়া কি এখন যৌক্তিক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষার তারিখএএমপি/এসইউ/জিকেএস
Advertisement