প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য প্রথমেই আমাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে খর্ব করেনি। আমরা গণমাধ্যমের সেই ধরনের নিখুঁত পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি, যেখানে ভয় ছাড়াই যে কোন ব্যক্তি স্বাধীন সাংবাদিকতার চর্চা করতে পারেন।
Advertisement
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে অক্সফাম বাংলাদেশের উদ্যোগে ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আশিষ দে এবং কি নোট প্রেজেন্ট করেন মুস্তাকিম বিল্লাহ। এছাড়া প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন- চ্যানেল ২৪ এর সিইও তালাত মামুন, পিআইবির পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ ও শামীম আরা শিউলি প্রমুখ।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এই সময়টিই প্রশ্ন তোলার উপযুক্ত সময়। এখন আপনারা বলতে পারেন, প্রশ্ন করার জন্য কি আমাদের সঠিক পরিবেশ আছে? গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে? আমি আপনাদের সরকারের পক্ষ থেকে বলতে পারি, সবার অধিকার রয়েছে। আমরা গত পাঁচ মাস ধরে বারবার বলছি যে, প্রশ্ন করার এটিই সর্বোত্তম সময়। শক্তিশালী ব্যক্তি ও লবিদের জবাবদিহিতার এটিই সর্বোত্তম সময়।
Advertisement
গত পাঁচ মাসে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সরকার কোনো নিরাপত্তা সংস্থা ব্যবহার করেনি বা কোনো দমনমূলক আইন ব্যবহার করেনি উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, আপনাদের যদি কোনো কঠিন অভিযোগ থাকে, তাহলে আমাদের জানান। আমরা সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করব।
গণমাধ্যমের অভূতপূর্ব স্বাধীনতা রয়েছে মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, আপনারা যে কোনো সমালোচনা করতে পারেন। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকেও সমালোচনা করতে পারেন, উপদেষ্টাদের প্যানেলেরও সমালোচনা করতে পারেন। আপনারা সবার সমালোচনা করতে পারেন। সুতরাং আপনাদের স্বাধীনতা রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, স্পষ্টতই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে। আমাদের প্রকল্পগুলো টেকসই কি না সে সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের কথা ভাবতে হবে। আমরা যে প্রকল্পই গ্রহণ করি না কেন, তা নিশ্চিতভাবেই আমাদের এই ডেল্টাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
আরও পড়ুন
Advertisement
প্রেস সচিবের মতে, আমরা শত শত ডেনিম কারখানা স্থাপন করেছি। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, প্রতিটি ডেনিম ওয়াশ করতে প্রায় ১২৫ লিটার পানি লাগে। আমাদের নদীর অবস্থা দেখেন। আমি সর্বশেষ শুনেছি, আমাদের কমপক্ষে ৫৪টি নদী দূষিত অবস্থায় রয়েছে। আমরা এই শহরটিকে বসবাসের অযোগ্য করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। বায়ুদূষণের দিক দিয়েও বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশে এখন ২৫০টি সবুজ কারখানা রয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব প্রশ্ন করেন, তারা কি সত্যিই সবুজ? তিনি বলেন, আমি এক বা দুটি সবুজ কারখানার কথা জানি যারা নদী দখল করে স্থাপিত হয়েছিল। আমরা কী ধরনের সবুজ কারখানা তৈরি করছি? তারা কি সত্যিই বৈশ্বিক মানদণ্ড মেনে চলে?
প্রেস সচিবের মতে, মানুষের এটা বোঝা উচিত যে, উন্নয়ন বলতে কেবল রপ্তানি বাড়ানো বা বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিকেই বোঝায় না। উন্নয়ন প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। তাই আমি মনে করি, আমাদের আরও প্রশিক্ষণ ও গণমাধ্যমের সাক্ষরতা প্রয়োজন। আমি আশা করি অক্সফাম তা সহজতর করবে।
এসআরএস/এএমএ