ক্যাম্পাস

হামলাকারীদের অনেকেই শিক্ষার্থী নয় বলে মনে হয়েছে

কবি নজরুল সরকারি কলেজ ভাঙচুর না করতে হামলাকারীদের বারবার অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান।

Advertisement

তিনি বলেন, হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষার্থী ছিলেন না, এমনটি মনে হয়েছে। তারা আমার সঙ্গেও উগ্র আচরণ করেছেন। আমি তাদের বারবার অনুরোধ করেছি যেন কলেজ ভাঙচুর করা না হয়। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তার স্বার্থে এবং সহকর্মী শিক্ষকদের অনুরোধে আমি সেখান থেকে সরে আসি।

রোববার (২৪ অক্টোবর) রাতে কলেজে ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে কলেজের সব শিক্ষার্থীকে শান্ত থাকার অহ্বানও জানান তিনি।

অধ্যক্ষ বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। তারা পাল্টা আক্রমণে যাননি। তাছাড়া সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলমান ছিল। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি যেন কোনো পরীক্ষার্থী আহত না হন। তারা যেন সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, কেউ কোনো গ্রুপে উসকানিমূলক কিছু লিখবেন না এবং শান্ত থাকবেন।

Advertisement

হামলা থামানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখন কলেজ ভাঙচুর করা হয় তখন আমি তাদের বলেছি, যদি কোনো ব্যক্তি বিশেষ অপরাধ করে থাকে সে বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলেজ একটি পবিত্র জায়গা। এটি ভাঙচুর করা ঠিক নয়। সে সময় যারা ছাত্র ছিলেন তারা এ ব্যাপারে সাড়া দিয়েছেন (হামলা থেকে সরে গিয়েছেন)। কিন্তু সে সময় অনেকেই উগ্র আচরণ করেছেন। তাদেরকে আমার ছাত্র বলে মনে হয়নি। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি, আপনারা আমাদের কলেজ ভাঙচুর করবেন না।

আরও পড়ুনন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর ২ ঘণ্টায়ও থামেনি বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ 

অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, যারা আজকের ঘটনায় আহত হয়েছেন তাদের প্রতি আমরা সহমর্মিতা জানাচ্ছি। তাদের সুচিকিৎসার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। কেউ যদি গুরুতর আহত হয়ে থাকেন কলেজের পক্ষ থেকে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

পরীক্ষা চলাকালীন হামলার কারণে অনেক শিক্ষার্থীই পরীক্ষা শেষ করতে পারেননি। তাদের কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তিনি সবকিছু দেখে গিয়েছেন। এটি কলেজ প্রশাসন দেখবে। আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছি। কারণ, আমরা তো সন্ত্রাসী ভাড়া করতে পারবো না। সেজন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কলেজ ভাঙচুরের ঘটনায় পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে, রোববার দুপুরের পর সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে ঢাকার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা হামলা ও ভাঙচুর চালান।

Advertisement

মূলত, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গত বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ওইদিনের হামলাকারীরা একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার ঢাকার কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে ভাঙচুর চালান ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করেন। সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রায় সব বিভাগ ও ক্লাসরুমের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে।

এনএস/কেএসআর