হাওয়ায় মিঠাই। মুখে দিলেই হাওয়ার মতো মিলিয়ে যায়। শিশুদের পছন্দের খাবার হাওয়ায় মিঠাই। তবে বড়দের পছন্দের তালিকায়ও কম যায় না। চিনি দিয়ে তৈরি এ খাবারটি গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি হলেও এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে বংশ পরম্পরায় শখের বশে অনেকে হাওয়ায় মিঠাই ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।বিশেষ প্রক্রিয়ায় চিনিকে তাপ দিয়ে বিশেষ মেশিনে হাত দিয়ে ঘুরিয়ে হাওয়ায় মিঠাই তৈরি করা হয়। সাদা এবং গোলাপি দু`ধরনের হাওয়ায় মিঠাই হয়ে থাকে। গ্রামে ভ্যানের উপর হাওয়ায় মিঠাই তৈরি সরঞ্জাম নিয়ে হাওয়ায় মিঠাই তৈরি করতে দেখা যায়। কাঁচ দিয়ে ঘেরা বাক্সে ছোট ছোট গোলাকার এবং বড় আকারে হাওয়াই মিঠাই পলিথিনে মুড়িয়ে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে ফেরিওয়ালারা বিক্রি করেন।এছাড়াও গ্রামে এক সময় ঘুরে ঘুরে হাতে পিতলের একটি ঘণ্টা টুং টাং করে বাজিয়ে আওয়াজ হলেই বুঝা যেত হাওয়াই মিঠাই আসছে। ঘণ্টার আওয়াজ শুনে বাচ্চারা ছুটে যান টাকা অথবা পুরনো লোহা জাতীয় পদার্থ, প্লাস্টিক, ব্যাটারি, জুতা, হাঁস-মুরগির ফোঁড়(পালক) নিয়ে। আর এগুলোর বিনিময়ে হাতে পেয়ে যায় হাওয়াই মিঠাই।নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ভোলা প্রামানিক। প্রায় ২০/২৫ বছর ধরে হাওয়াই মিঠাই তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ভোলা প্রামানিক জানান, হাওয়াই মিঠাই এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে বংশ পরম্পরায় ধরে রাখতে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছি। আমার সন্তানরা হয়তো এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হবে না। আমার আমলেই হয়তো শেষ হয়ে যাবে। তাই যত দিন পারবো ব্যবসা চালিয়ে যাবো। ব্যবসায় পরিশ্রম কম হলেও লাভ মোটামুটি ভাল। আমার গ্রামেও ৫/৬ জন এ ব্যবসা করেন।ভোলা জানান, হাওয়াই মিঠাই মূলত দু’ধরনের তৈরি করা হয়। সাদা এবং গোলাপি রঙের। সাদা হাওয়াই মিঠাই তৈরি করতে ২৫ গ্রাম চিনি খরচ হয়। চিনিসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় পাঁচ টাকার মতো হয়। আর প্রতিটি হাওয়াই মিঠাই বিক্রি হয় দশ টাকা পিস।তিনি আরও বলেন, গোলাপিটা তৈরিতে খরচ একটু বেশি হয়। এতে খাবারের গোলাপি রং মেশানো হয়। তবে সাদাটা বিক্রি করে পুশিয়ে নেয়া যায়। বাজারে চিনির দাম কম বেশি হলেও হাওয়াই মিঠাইয়ের দাম দশ টাকায় থাকে। এক কেজি চিনি দিয়ে প্রায় ৫০ পিস হাওয়াই মিঠাই তৈরি করা যায়। হাওয়াই মিঠাই গ্রামের বিভিন্ন স্কুলের গেটে, ছোট বাজার এবং বিভিন্ন মেলায় গিয়ে বিক্রি করা হয়।এসএস/পিআর
Advertisement