আল্লাহ তাআলা যখন নবিজিকে (সা.) তার আত্মীয়দের ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আয়াত অবতীর্ণ করলেন,
Advertisement
وَ اَنۡذِرۡ عَشِیۡرَتَکَ الۡاَقۡرَبِیۡنَতুমি তোমার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক কর। (সুরা শুআরা: ২১৪) তখন নবিজি (সা.) হাশেমি গোত্রকে দাওয়াত দিলেন। নবিজির দাওয়াতে নবিজির আপন চাচারা অর্থাৎ আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানরাসহ হাশেমী গোত্রের ৪৫ জন ব্যক্তি উপস্থিত হলো। ওই জমায়েতে কাউকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আবু লাহাব বললো, এখানে যারা উপস্থিত আছে সবাই তোমার চাচা বা চাচাতো ভাই। তুমি ধর্মত্যাগের আলোচনা বাদ দাও। তোমার জেনে রাখা উচিত তোমার গোত্র অনেক বেশি শক্তিশালী নয়। আমি ও তোমার অন্যান্য চাচাদেরই কর্তব্য তোমাকে বাঁধা দেওয়া এবং ধর্মত্যাগের দাওয়াত দেওয়া থেকে বিরত রাখা। যদি তুমি তোমার নতুন ধর্মপ্রচার অব্যাহত রাখো, তাহলে কুরাইশের সবগুলো গোত্র তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে, আরবের অন্যান্য গোত্রের লোকেরাও তাদের সাহায্য করবে। তুমি তোমার চাচাদের জন্য অত্যন্ত নিকৃষ্ট বিপদ ডেকে এনেছো!
রাসুল সা. তার কথা শুনে চুপ রইলেন এবং ওই জমায়েতে আর কথা বললেন না।
তারপর আরেকদিন তিনি তাদের দাওয়াত দিলেন এবং বললেন, সকল প্রশংসা আল্লাহর, আমি তার প্রশংসা করি, তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি, তার ওপর ইমান আনি, তার ওপর ভরসা করি এবং আমি সাক্ষ্য দেই যে তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই। বিপদের খবর নিয়ে আসা ব্যক্তি কখনও তার পরিবারের কাছে মিথ্যা বলে না। আল্লাহর শপথ করে বলছি যিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, নিশ্চই আমি তোমাদের কাছে এবং সব মানুষের কাছে রাসুল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। তোমরা যেভাবে ঘুমিয়ে পড়ো, এভাবেই একদিন মারা যাবে, যেভাবে জেগে ওঠো, সেভাবে তোমাদের পুনরায় জীবিত করা হবে এবং তোমাদের কৃতকর্মের প্রতিফল তোমাদের পেতে হবে। তোমরা চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করবে অথবা চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
Advertisement
তার বক্তব্য শুনে আবু তালিব বললেন, আমরা তোমাকে সাহায্য করতে চাই, তোমার উপদেশ গ্রহণ করি এবং তোমার বক্তব্য সত্য মনে করি। তোমার চাচারা এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ, আমিও তাদের অন্যতম। তাই তোমাকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সে পথে এগিয়ে যাও। আল্লাহর কসম! আমরা তোমাকে সুরক্ষা দেবো এবং তোমার ওপর আসা যে কোনো আঘাত প্রতিহত করবো। তবে আমার অন্তর আব্দুল মুত্তালিবের ধর্ম ছাড়তে সায় দেয় না।
আবু লাহাব বলে উঠলেন, এটা নিকৃষ্ট সিদ্ধান্ত! অন্যরা বাঁধা দেওয়ার আগে তোমরা তাকে বাঁধা দাও।
আব্দুল মুত্তালিব বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা যতোক্ষণ বেঁচে আছি, তাকে রক্ষা করে যাবো।
সূত্র: কামেল লিইবনে আসীর (২৭/২)
Advertisement
ওএফএফ/জিকেএস