লাইফস্টাইল

বর্ষায় চোখ ওঠার সমস্যা সারাতে ও সংক্রমণ এড়াতে যা করবেন

চোখ ওঠা বা কনজেক্টিভাইটিস হলো বর্ষাকালের সবচেয়ে সাধারণ সংক্রমণগুলোর মধ্যে একটি। এ সময় অনেকেই চোখ ওঠার সমস্যায় ভোগেন। রোগটি অত্যন্ত সংক্রামক ও বেশ যন্ত্রণাদায়ক।

Advertisement

অ্যালার্জি, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে কনজেক্টিভাইটিস হতে পারে। এক বা উভয় চোখে হতে পারে কনজেক্টিভাইটিস। এক্ষেত্রে চোখ লাল হয়ে যায়, ফুলে যায়, জ্বালাপোড়া করে ও চুলকানি হয়।

আরও পড়ুন: চোখ লাফানো কি কোনো রোগ?

এ সময় কনজেক্টিভাইটিস থেকে নিরাপদ থাকতে কী করা উচিত? গোলাপী চোখের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও বন্ধ করার জন্য এখানে একজন ডাক্তারের কাছ থেকে কিছু পেশাদার টিপস রয়েছে :

Advertisement

চোখ স্পর্শ করবেন না

চোখ ওঠার সমস্যা হলে বারবার চোখ ঘষা বা স্পর্শ এড়িয়ে চলুন। এর থেকে রোগ আরও বাড়তে পারে এমনকি এক চোখ থেকে অন্য চোখেও ছড়াতে পারে। চোখের চারপাশ থেকে যে কোনো স্রাব পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে একটি ভেজা ওয়াশক্লথ বা তুলা ব্যবহার করুন।

ভুলেও কন্টাক্ট লেন্স পরবেন না

চোখ ওঠার সমস্যা না সারা পর্যন্ত ভুলেও লেন্স পরবেন না চোখে। আর অবশ্যই লেন্সগুলো পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। না হলে তাতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থাকতে পারে ও আবারো চোখের সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘চোখ ওঠা’সহ আরও যে কারণে রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে চোখ

হাত ধুতে থাকুন

আপনার যদি কনজেক্টিভাইটিস থাকে, তাহলে সাবান-গরম পানি দিয়ে কমপক্ষে ২ সেকেন্ডের জন্য ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন। এছাড়া প্রতিবার সংক্রামিত চোখ পরিষ্কার করার আগে ও পরে বা চোখের ড্রপ বা মলম প্রয়োগ করার আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

কম্প্রেস ব্যবহার করুন

চোখের ফোলাভাব কমাতে একটি পরিষ্কার কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে আলতো করে বন্ধ চোখের উপরে কিছুক্ষণ রাখুন। খুব জোরে চোখে চাপ দেবেন না। চাইলে গরম পানিতেও কাপড় ভিজিয়ে ভাপ নিতে পারেন।

চারপাশ স্যানিটাইজ করুন

আপনার মোবাইল ফোন, রিমোট ও দৈনন্দিন জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখুন। গরম পানি ঘন ঘন তোয়ালে ও বালিশের কভার পরিষ্কার রাখুন। আক্রান্তের তোয়ালে ও বালিশ যেন অন্য কেউ ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

আরও পড়ুন: কোন রঙের চোখ কোন রোগের ইঙ্গিত দেয়?

হাইড্রেট থাকতে হবে

ভারতের একজন সার্টিফাইড নিউট্রিশনিস্ট ডা. রোহিনী প্যাটেল (এমবিবিএস) বলেছেন, ‘সঠিক হাইড্রেশন ও স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এটি আপনার চোখকে আর্দ্র রাখতে ও কনজেক্টিভাইটিসের সঙ্গে যুক্ত শুষ্কতা ও জ্বালা কমাতে সাহায্য করবে।’

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান

আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করতে ও নিরাময় প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। সাইট্রাস ফল (যেমন কমলা, জাম্বুরা ও লেবু), স্ট্রবেরি, কিউই, পেয়ারা ইত্যাদি ফল ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস।

আরও পড়ুন: চোখের নিচে ফুলে ওঠে কেন? রইলো সমাধানের উপায়

বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান

বিটা-ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা সুস্থ দৃষ্টি বজায় রাখতে ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এজন্য ডায়েটে গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া, বাটারনাট স্কোয়াশ, আম, অ্যাপ্রিকট, পালংশাক ও কেল জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন ডা. রোহিনী।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অন্তর্ভুক্ত করুন

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে, যা চোখের প্রদাহ কমাতে ও সামগ্রিক চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে।

তাই ডায়েটে চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন, ম্যাকেরেল, সার্ডিন ও ট্রাউট) ও ওমেগা ৩ এর উদ্ভিদ-ভিত্তিক উৎস (ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ, আখরোট ও শণের বীজ) অন্তর্ভুক্ত করুন।

আরও পড়ুন: চোখ জ্বালাপোড়া করে কেন? সারাতে যা করবেন

অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলুন

কনজেক্টিভাইটিসের সময় সম্ভাব্য বিরক্তিকর ও অ্যালার্জেনগুলো এড়িয়ে চলুন। না হলে চোখের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।

ধোঁয়া, ধুলো, পোষা প্রাণীর লোম অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই এ ধরনের যে কোনো পদার্থ থেকে দূরে থাকুন।

আর অবশ্যই চোখ ওঠার সমস্যা সারাতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি উপরোক্ত নিয়ম মেনে চলরে দ্রুত রোগীর সুস্থতা মিলবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/এএসএম