সাহিত্য

কবি মিজানুর রহমান বেলালের ১৫০ নাটক

কবি ও নাট্যকার মিজানুর রহমান বেলাল এ সময়ের সাহিত্যচর্চায় একটি আলোচিত নাম। তার জন্ম নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায়। শৈশব কেটেছে গ্রামে। পেশায় একজন প্রকৌশলী হলেও লেখালেখিতে তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। দেড় যুগ ধরে লেখালেখি করে ব্যাপক পরিচিতিও লাভ করেছেন।

Advertisement

মিজানুর রহমান বেলালের ১১টি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো- সীমান্তের কাঁটাতার (২০১১), জন্মান্ধের জবানবন্দি (২০১২), বিফল চাষের কীর্তন (২০১৩), বায়বীয় বায়োস্কোপ (২০১৪), বেদনাবৃত্তের বনখাগড়া (২০১৫), কর্কট রাশির কবিতা (২০১৬), জুমজুয়াড়ি (২০১৭)। কবিতায় তিনি নানাভাবে নানা সময়ে আলোচিত হয়েছেন।

‘জুমজুয়াড়ি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি কবিতায় ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০১৭’ পেয়েছেন। ‘জুমজুয়াড়ি’ গ্রামীণ জীবন আর জনপদের শিল্পকথা। মিজানুর রহমান বেলালের কবিতার চরণ যেন মনে করিয়ে দেয় আমাদের চিরচেনা সেই গ্রামের কথা, সেখানকার মানুষের কথা। তার কবিতায় দুঃখবোধ, মানবিক আহ্বান, নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক দায়বোধ উচ্চকিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: মজিদ মাহমুদের কবিতা: মহাভাষ্যের বলয় থেকে

Advertisement

একই সঙ্গে বেলালের লেখা ১৫০টি নাটক, টেলিফিল্ম, ওয়েবফিল্ম বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হয়েছে। তার লেখায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের টানাপোড়েন, যাপিত জীবনের আখ্যান, মানুষের নানা অসঙ্গতি উঠে আসে। হাসি-কান্নার চিত্রায়ণ করেন চরিত্র রূপায়নের মধ্য দিয়ে। দর্শককে টিভি স্ক্রিনে আটকে রাখার জাদু আছে তার চিত্রনাট্যে। সমসাময়িক ভাবনাগুলোকে ধারণ করে বিভিন্ন বার্তা দিয়ে থাকেন অনায়াসে।

বেলালের আলোচিত ওয়েবফিল্ম আল হাজেন পরিচালিত ‘আলপিন’ ও নাটকের মধ্যে সকাল আহমেদ পরিচালিত ‘শহরনামা’, ‘বিসিএস বক্কর’, ‘বক্কর এখন ব্যাংকার’, চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ‘স্যারের মেয়ে’, ‘শুভকামনা’, ‘বড়ভাবী’, ‘হুইল চেয়ার’ প্রভৃতি।

রাকেশ বসু পরিচালিত ‘ফেরিওয়ালা’, আবু হায়াত মাহমুদ পরিচালিত ‘রুমাল’, আদিত্য জনি পরিচালিত, ‘কর্মকারের প্রেম’, ‘অনুশোচনা’, ‘দিন-দুপুরে ডাকাতি’, ‘জুয়াড়ির প্রেম’, ‘কষ্টের নাম জাদুঘর’, ‘নগরবালা’, ‘ওসাম ওসমান’, ‘নায়িকাপ্রীতি’, ‘তোমার নাম কি’, তপু খান পরিচালিত ‘পারফিউম’, ‘আত্মত্যাগ’, জহির খান পরিচালিত ‘মি. মেন্টাল ম্যান’, ‘ফাঁপড়বাজি’, সাহেল সুমন পরিচালিত ‘গেমারু’, ‘পেনফ্রেন্ড’, স্বপন বিশ্বাস পরিচালিত কংক্রিটের প্রজাপতি দর্শকদের মাঝে আলোড়ন তুলেছে।

আরও পড়ুন: চাঁন-পরীর সংসার

Advertisement

এছাড়া মাসুদ করিম সুজন, মনিরুজ্জামান জুলহাস, মাহমুদ হাসান শিকদার, আল হাজেন, আনিস রহমান, আনিসুর রহমান রাজিবসহ অনেক পরিচালক তার গল্পে নাটক নির্মাণ করেছেন ‘ছাতিম কাঠের কফিন’, ‘ভালো মানুষ হতে চাই’, ‘সাধুসংঘ’, ‘ভালোবাসা এমনি হয়’, ‘প্রবাসী প্রেমিকা’সহ ১৫০টি নাটক এবং টেলিছবি। ইউটিউবেও তার অনেক নাটক মিলিয়ন ভিউসের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। অভিনয় করেছেন দেশের জনপ্রিয় সব অভিনেত্রী-অভিনেতা।

কবিতায় তিনি ৬টি বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন। পুরস্কারসমূহ হলো- কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০১৭, বাঙলা সাহিত্যিকী পদক ২০০২ (রাজশাহী), অরণি গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় সেরা গল্পকার ২০১৩, লিটলম্যাগ সম্পাদনায় কবি আয়েশা আশরাফ স্মৃতি সাহিত্য সম্মাননা ২০১৬। তিনি সম্পাদনা করেন সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘দাগ’। প্রতি বছর দেশের কবি-লেখকদের ‘দাগ সাহিত্য পুরস্কার’ দিয়ে আসছেন।

লেখালেখি ও বিভিন্ন কার্যক্রম প্রসঙ্গে মিজানুর রহমান বেলাল বলেন, ‘কবিতাও নিয়মিত লিখছি। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হচ্ছে। তবে নাটক-টেলিফিল্ম লিখে বেশি আনন্দ পাচ্ছি। আমার রচনায় এ বছর ১টি চলচ্চিত্র, ২টি ওয়েবফিল্ম, ১টি ধারাবাহিকের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। খুব শিগগির দাগ সাহিত্য পুরস্কারের ঘোষণাও আসবে।’

এসইউ/এমএস