কৃষি ও প্রকৃতি

হলুদ তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি

নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা এলাকার কৃষক সামছুল ইসলাম। ধান, ভুট্টা, আলুসহ অন্য সবজি চাষ করেন। এসব ফসল উৎপাদনের পর উপার্জিত অর্থ দিয়েই চলে তার সংসার। তবে কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে ভালো ফলন পাননি সামছুল। কিছু ভেবে না পেয়ে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেন হলুদ বর্ণের নতুন জাতের তরমুজ। এ পরীক্ষামূলক চাষেই সামছুলের জমিতে এসেছে ভালো ফলন। মুখে ফুটেছে হাসি, স্বপ্ন দেখছেন বেশি লাভের।

Advertisement

সামছুল ইসলামের মতো নতুন জাতের এ তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন নীলফামারী পৌরসভার হাড়োয়া এলাকার নুরীন নূর ওরফে মুক্তা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ হওয়ায় এ অঞ্চলের মাটিতে ব্যাপক চাষ সম্ভব। এতে বেশি লাভবান হবেন কৃষক।

আরও পড়ুন: মিষ্টি কুমড়া চাষে কৃষক ওমর ফারুকের সফলতা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ব্ল্যাক বেবি ও তৃপ্তি নামে দুটি জাত আছে এ তরমুজের। মূলত গ্রীষ্মকালেই চাষ করা যায় এ তরমুজ। যা এ অঞ্চলের মাটির জন্য অনুকূল। ফলে উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা আছে। প্রতিটি তরমুজের ওজন ২-৩ কেজি পর্যন্ত হয়। ৮০-১০০ দিনেই হারভেস্ট করা যায় নতুন জাতের এ তরমুজ। এছাড়া এটি চাষ করলে ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি সম্ভব। ফলে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আগামীতে আরও চাষ বাড়বে বলে আশাবাদী দপ্তরটি।

Advertisement

কৃষক সামছুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি আলু, ভুট্টা ও ধান চাষ করি। কিন্তু ঝড়, বৃষ্টি ও পোকার জন্য কয়েক বছর ধরে চাষ হচ্ছে না। তেমন আয়ও নেই। পরে কৃষি অফিসার পরামর্শ দিলেন এটা চাষ করতে। তাই ১৫ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। এখন তো ভালো ফলন এসেছে। আমার ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ১ লাখ টাকার মতো বিক্রি করতে পারবো বলে মনে হচ্ছে।’

মুক্তা বেগম বলেন, ‘২০ শতাংশ জমিতে তৃপ্তি ও ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। লাভবান হবো আশা করছি।’

আরও পড়ুন: সোনাগাজীর কৃষকদের মুখে হাসি

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকারিয়া ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ নতুন জাতের তরমুজ। যা প্রথম নীলফামারীতে চাষ হয়েছে। এটি অত্যন্ত লাভজনক। কম সময়ে চাষ ও কম খরচে বেশি লাভের সম্ভাবনা আছে। আমরা চেষ্টা করছি আগামীতে এর ফলন ও চাষ বাড়াতে।’

Advertisement

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ দিয়েছি। এছাড়া কারিগরি সহায়তা, কীভাবে কী করতে হবে; তা বলেছি। ৩ জন চাষ করেছেন ২০ শতাংশ করে জমিতে। সবার ফলন ভালো হয়েছে। ১ বিঘা জমিতে ২-৩ লাখ টাকা আয় হতে পারে। আশেপাশের কৃষকেরা উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তাদের মাধ্যমে ব্যাপক চাষ করতে পারবো বলে আশা করি।’

রাজু আহম্মেদ/এসইউ/এমএস