বিশেষ প্রতিবেদন

সিলেটে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম ভোটের মাঠ

সিলেট সদর উপজেলার ৮ ইউনিয়নে জমে ওঠেছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রার্থীরা যাচ্ছেন ভোটারের ঘরে ঘরে। ভোটারদের যেখানেই পাচ্ছেন সেখানেই হাত মেলাচ্ছেন ও নিজের প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন। নির্বাচনী এ দৃশ্য এখন উপজেলার আট ইউনিয়নে। নির্বাচনী প্রচারণায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতীকে আগামী ২২ মার্চ প্রথম দফায় অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সিলেট সদরের ৮টি ইউনিয়নের ভোট হবে। ইতোমধ্যে গত ৩ মার্চ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক পেয়েই ওইদিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা ও পোস্টারিং করছেন প্রার্থীরা। তাদের ঘিরে সরব এখন সিলেটের গ্রাম এলাকা। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ছুটে চলেছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। করছেন ভোট প্রার্থনা। হাতে হাতে প্রতীক সংবলিত লিফলেট। সদর উপজেলার ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীরা প্রচারণায় নিয়ম ভাঙ্গছেন। গভীর রাত পর্যন্ত তারা প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে আরো সতর্ক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে সিলেটে বিএনপির জয়জয়কার হবে। তবে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ জাগো নিউজকে জানান, বর্তমান সরকার সিলেট সদরে যুগান্তকারী উন্নয়ন করেছে। সদরের মানুষের মুখে এখন শুধুই হাসি। এ কারণে এই উপজেলায় নৌকার প্রার্থীদের প্রতি মানুষের সমর্থন বেশি। তিনি বলেন, গোটা উপজেলায় এখন উৎসব চলছে। এ উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে নির্বাচন। আগামীতেও যাতে উৎসবমুখর পরিবেশই থাকে সেটিও চায় আওয়ামী লীগ।কান্দিগাঁও ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীর আবদুল আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সিলেটে অন্তত ভোটের মাঠে আমেজের অভাব নেই। কিন্তু শংকা আছে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধির কোনো তোয়াক্কা করছেন না। তারা গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আমি নির্ধারিত সময়ের বাইরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছি না।’তিনি আরো বলেন, যদি নির্বাচনী মাঠ নিরপেক্ষ হয়, ভোটাররা নির্বিঘ্নে গিয়ে ভোট দিতে পারেন তবে তার জয় নিশ্চিত। কারণ, নীরব ভোটাররা তার পক্ষে রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, গ্রামে গ্রামে ভোটের উৎসব শুরু হয়েছে। এই ভোটের উৎসবে কেবল প্রার্থীরাই নয়, জড়িয়ে পড়ছেন ভোটাররাও। এ উৎসবের কারণ কী- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে প্রতীক নিয়ে বঙ্গবন্ধু, যে প্রতীক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন করছেন, সেই প্রতীক নৌকা নিয়ে আমি নির্বাচন করছি। আর ভোটাররাও প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালাতে পারছেন। এ কারণে আনন্দের কমতি নেই। পার্শ্ববর্তী টুকেরবাজার ইউনিয়নের ভোটের মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। সকালেই কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েন টুকেরবাজার ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী শহীদ আহমদ। স্থানীয় তেমুখী পয়েন্টে তিনি আসার সঙ্গে সঙ্গেই এগিয়ে আসেন ৫০-৬০ নেতা। প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়েই তারা দোকানে দোকানে নেমে পড়েন প্রচারণায়। তবে কোনো স্লোগান ছিল না। কেবল লিফলেট বিতরণ করেই প্রচারণা চালিয়ে যান শহীদ। তিনি টুকেরবাজার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। প্রচারণার ফাঁকেই শহিদ আহমদ জানান, তিনি বিএনপি সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সর্বশেষ আওয়ামী লীগের সরকারের শাসনামলে চেয়ারম্যান রয়েছেন। তিনি নিজ উদ্যোগেই মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ শুরু করেছেন। গেল কয়েক বছর ধরে তিনি নিজ উদ্যোগে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার খুলেছেন। ওই সেন্টারগুলোতে বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। শহীদ চেয়ারম্যান বলেন, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে আমাদের আর কোনো অভাব থাকবে না। জেএইচ/এমএস

Advertisement