ভ্রমণ

নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণে ঘুরে আসতে ভুলবেন না আরও ৩ স্পট

মিরাজ উদ্দিন

Advertisement

বাংলাদেশ যে কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র আছে তার মধ্যে নিঝুম দ্বীপ অন্যতম। নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিল ভাওলারচর। ২০০১ সালে সরকার পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে এরপর থেকে দেশে ও দেশের বাইরে অল্প কয়েক বছরের মধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের মনের মধ্যে জায়গা করে নেই।

এর অবস্থান হলো নোয়াখালী জেলা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ার একটি ছোট্ট ইউনিয়ন। বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এর অবস্থান।

বছরের অন্যান্য মৌসুমের চেয়ে শীতকালে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি দেখা যায় নিঝুম দ্বীপে। সবুজ প্রাকৃতিক লোকারণ্য হওয়ায় অল্পতেই মন চুইয়ে যায় পর্যটকদের।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘পাঠান’ সিনেমার শুটিং হয়েছে বিস্ময়কর যে ১০ স্থানে 

নিঝুম দ্বীপের হরিণরা সবাইকে আকর্ষণ করে। মজার বিষয় হলো, হরিণ আপনার হাতের কাছেই এসে চিপস, বিস্কুট ইত্যাদি শুকনো খাবার নিয়ে খাবে।

এছাড়া বিকেলে পশ্চিম দিকের সি বিচে গেলে আপনার মন খারাপ থাকলে ভালো হয়ে যাবে। কারণ সামনে অ থৈ সাগর আর সাগর।

সাগরের মাঝে পাল উড়িয়ে নৌকা ডিঙিয়ে মাছ ধরছেন আর ভাটিয়ালি গান গাচ্ছেন জেলেরা। এই সুন্দর পরিবেশ দেখে যে কেউ মন হারিয়ে যাবে কল্পনার জগতে।

Advertisement

আর যদি সম্পূর্ণ দ্বীপটি দেখতে চান তাহলে নামার বাজারের পাশে একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে, ওইখানে উঠলেই পুরো দ্বীপ আপনি উপভোগ করতে পারবেন। নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ শেষ হলে আরও যে ৩ স্পটে ঘুরে আসতে পারেন।

আরও পড়ুন: এভারেস্টে চড়া গাড়ি কেনার চেয়েও বেশি ব্যয়বহুল, জানুন খরচাপাতি 

কমলার দিঘি

হাতিয়া উপজেলা ওছখালী থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে এই সি বিচের অবস্থান। কীভাবে এই কমলা দিঘি নামের উৎপত্তি হয়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি, তবে বিশাল একটি দিঘি আছে বলে ধারণা করা যায়। এই দিঘির নাম থেকেই কমলা দিঘির নামকরণ করা হয়।

সেখানে গেলে কেওড়া, পাপনসহ ছোটো ছোট গাছের ভেতরে পছন্দ মতে করে ফটোসেশন করতে পারবেন নিজের মতো করে। সেখান ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার জন্যও আছে বিশাল মাঠ।

মজার বিষয় হলো, এই কমলা দিঘির সি বিচে বছরের ১২ মাসই যাওয়া যায়। বর্ষা মৌসুমে নদীর বিশাল ঢেউ দেখলে ভয়ও লাগতে পারে।

কমলা দিঘির পূর্বপাশে আছে মেঘনা ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আমদানি ও রফতানির জাহাজগুলো আপনার চোখে পড়বে।

আরও পড়ুন: ভালোবাসা দিবসে সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরে আসুন ‘বাংলার তাজমহলে’ 

নিমতলী

নিমতলীকে বলা হয় মিনি কক্সবাজার। আপনি এই সি বিচে গেলে কক্সবাজারের মতো মনে হবে আপনার। চাইলে ঘোড়ায় চড়ে পুরো সি বিচ ঘুরে দেখতে পারবেন।

নিমতলীতে গেলে আপনি মরুভূমিও দেখতে পারবেন। সামান্য দক্ষিণ পশ্চিমে গেলে এই মরুভূমির দেখা মিলবে। বালু আর বালু। নিমতলীতে যাওয়ার সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো শীতকাল।

বর্ষাকালে সেখানে যাওয়ার কোনো রাস্তা থাকে না। ২০২২ সালে পর্যটকমন্ত্রী নিমতলী ভ্রমণ করেন ও স্থানটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেন। আপনি যদি নিরিবিলি স্থানে যেতে চান তাহলে নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণের পাশাপাশি এই নিমতলী থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

আরও পড়ুন: ঘরজামাই হয়েই জীবন কাটে যাদের 

লালচর

হাতিয়া বুড়ির চর ইউনিয়নের কালির চর ওয়ার্ডে এই সি বিচের অবস্থান। সাম্প্রতিকালে হাতিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হলো এই লালচর। কয়েক বছর আগে এই লাল চরের কোনো নাম শোনা যায়নি। তবে ২০২১ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লালচর সি বিচ নিয়ে বিভিন্ন ছবি পোস্ট করেন।

এরপর থেকে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে থাকে এই স্থানে। জানা যায়, এই বিচের লাল বালুর কারণেই এর নাম লালচর। আপনি যদি খাঁটি মহিষের দুধ ও দধি খেতে পছন্দ করেন তাহলে আপনার জন্য এই জায়গা সেরা।

আরও পড়ুন: রানিকে বাঁচাতে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন রাজা 

কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে সদরঘাট এগিয়ে তাসরিফ অথবা ফারহান জাহাজ করে তমরদ্দি বাজার হয়ে উছখালী। চট্টগ্রাম থেকে সদরঘাট লঞ্চ আছে অথবা নোয়াখালী মাইজদী হয়ে চেয়ারম্যান ঘাট হয়ে নলচিরাঘাট এসে উছখালী।

হাতিয়ায় থাকার হোটেল আছে। হোটেল আল আমিন, শাহারা হোটেল, হোটেল সিঙ্গাপুর, সোহেল রিসোর্টে। নিঝুম দ্বীপে আছে মসজিদ বেডিং, হোটেল শাহিন, নিঝুম ড্রিমল্যান্ড রিসোর্টে।

লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী

জেএমএস/জিকেএস