বাগানে সারিবদ্ধ মাল্টার গাছ। প্রতিটি গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ডালে ঝুলে রয়েছে আধাপাকা মাল্টা। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। মৌলভীবাজারের রাজনগরে আল আমিনের মাল্টা বাগানে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। মাল্টা চাষ করে আল আমিন এখন সফল ও স্বাবলম্বী হয়েছেন।
Advertisement
চার বছর আগে জেলার রাজনগর উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের নন্দিউড়া গ্রামের আল আমিন শখের বশে, কৃষিবিদ শেখ আজিজুর রহমানের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে মাটি উচুঁ করে মাল্টা চাষ শুরু করেন। কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রর্দশনীর দিয়ে আল আমিনকে মাল্টা চাষে উৎসাহিত করা হয়। এখন সে স্বাবলম্বী। নিজ উদ্যাগেই চাষ করে যাচ্ছেন।
২০২০ সালে দেড়টন মাল্টা উৎপাদন হয়েছে আল আমিনের । বিক্রি করেন ১ লাখ টাকা। প্রতিবছর মাল্টার উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়ায় আল আমিন অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায় আছেন। এ বছর ৩ টন মাল্টা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ঠিকমত বাজারজাত করতে পারলে ৩ লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন। তাকে অনুসরণ করে এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
আল আমিন বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে বিভিন্ন জাতের ফলে ফরমালিন ব্যবহারের হিরিক পরে। যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক। মানুষ নিরাপদ ফল খাওয়ার কথা ভুলে গিয়ে ছিল। ভেজালমুক্ত ফল উপহার দেওয়ার কথা চিন্তা করেই কৃষি বিভাগের সহযোগীতা নিয়ে মাল্টার বাগান করেছি। অল্প পরিশ্রমে কম খরচে মাল্টা চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
Advertisement
তার বাগানে বারি-১ থাইল্যান্ড জাতের ২০০টি মাল্টার গাছ রয়েছে। চারা রোপণের দুই বছর পর ফলন শুরু করে। তিন বছর পর একটি গাছে পূর্ণাঙ্গরূপে ফল ধরা শুরু করে। প্রতিটি গাছে ৩০০ থেকে ৪০০টি ফল আসে। তার বাগান দেখে অনেকেই মাল্টা চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ইফফাত আরা ইসলাম বলেন, মাল্টা চাষ করে আল আমিন সফল হয়েছেন। কৃষি বিভাগ সব সময় তাকে পরামর্শ দিয়ে থাকে। তার বাগানে গিয়ে দেখেছি মাল্টাগুলো পাকা শুরু হয়েছে। পরিপক্ক না হওয়া পর্যন্ত বাজারজাত না করতে বলেছি।
মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক কাজী লুৎফুল বারি বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মৌলভীবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। চাষিদের উদ্বুদ্ধ করেছেন আশানুরূপ ফলন হয়েছে।
এ অঞ্চলের মাটিতে মাল্টা চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে রাজনগর, জুড়ী, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া উপজেলায়। চাষিদের আমরা পরামর্শ দিয়ে, সহযোগিতা দিয়ে আসছি।
Advertisement
আব্দুল আজিজ/এমএমএফ/জেআইএম