কৃষি ও প্রকৃতি

ড্রাগন ফল চাষে ভাগ্য বদল

গতানুগতিক কৃষির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সময়ের প্রয়োজনে লাভজনক ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন মাগুরার চাষিরা। যার ফলাফল জেলার আনাচে-কানাচে ড্রাগন ফলের চাষ। মাগুরার মাটি ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী। পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এ জেলার অনেক চাষি।

Advertisement

এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছোট ছোট বাগান করে এ ফলের চাষ শুরু করেছেন অনেকে। শুরু হয়েছে বাণিজ্যিক উৎপাদনও। ড্রাগন ফল চাষিরা জানায়, এ জেলা থেকে প্রতিবছর পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার কেজি ড্রাগন উৎপাদন হয়।

মাগুরা সাইত্রিশ এলাকার ড্রাগন ফল চাষি মো. শওকত হোসেন জানান, তিনি বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত সংবাদ শুনে কয়েক বছর আগে অল্প কিছু জমিতে এ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে ৭০ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান করছেন। ড্রাগন চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছি।

আরও দুই লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি হবে বলে আশা করছি। আমার এই বাগানে জৈব সার বেশি লাগে। রাসায়নিক সার কম লাগে। তিনি আরও বলেন, আমার দেখাদেখি এলাকার শিক্ষিত যুবকরা বাগান করেছে। তাদের বাগানেও লাভ হচ্ছে। তারা চাকরির পিছনে না দৌড়ে অনেক আমার কাছে আসছে বাগান তৈরির পরামর্শের জন্য।

Advertisement

এলাকার শিক্ষিত যুবক সুজন হোসেন বলেন, বর্তমান যে অবস্থা তাতে চাকরি পাওয়া অনেক সমস্যা। আমি ড্রাগন বাগান করতে চাই। এজন্য শওকত ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে আমি এখান থেকে চারা নিয়ে আমি ড্রাগন ফলের বাগান করবো।

ফল ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, শওকত ভাইয়ের বাগান থেকে ড্রাগন নিয়ে জেলার বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করতাম। কিন্তু দেশের যে পরিস্থিতি সেজন্য অন্য জেলায় গিয়ে ফল বিক্রি করে ফিরে আসা কষ্টকর। বর্তমানে ফোনে অর্ডার নিচ্ছি এরপর কুরিয়ারের মাধ্যমে ফল ডেলিভারি দিচ্ছি। প্রতি কেজি দরে ড্রাগন ফল ৪০০ টাকায় কিনে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করছি।

হাজিপুর গ্রামের আবু কালাম বলেন, শওকত ভাইয়ের বাগানে আমি প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করছি। করোনা মহামারিতে অন্য কোথাও কোনো কাজ নেই। এখানে কাজ করে ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখে আছি।

মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টার উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. খান মনিরুজ্জামান বলেন, ড্রাগন একটি পুষ্টিকর ফল। এ ফলে রয়েছে অধিক পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মাগুরার বেশ কিছু জায়গায় এই ফলের চাষ হয়। অল্প খরচে অধিক লাভ হয় বলে অনেকেই এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

Advertisement

ইতোমধ্যে মাগুরা জেলাসহ আশপাশের উপজেলাতেও এই ফলের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ফল চাষ করতে জৈব সার একটু বেশি লাগে। রাসায়নিক সার কম লাগে। তাই অধিক লাভ করা যায়।

ড্রাগন ফলের দাম আকার ও আকৃতি ভেদে প্রতি কেজি ফল ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। আমরা হর্টিকালচারের পক্ষ থেকে ড্রাগন ফল চাষে চাষিদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন তারা।

মো: আরাফাত হোসেন/এমএমএফ/এমএস