প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বড় কাজের কাজী মানবসম্পদ বিভাগ! বাংলাদেশের অন্যতম বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান পারটেক্স স্টার গ্রুপের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা এম সাব্বির জাহাঙ্গীর। জাগো নিউজের সাক্ষাৎকারে তিনি জানান তার পড়াশোনা, ক্যারিয়ার আর তরুণদের জন্য ভাবনার বৃত্তান্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—
Advertisement
প্রথমেই নিজের সম্পর্কে বলুন—এম সাব্বির জাহাঙ্গীর: আমি ঢাকায়ই বড় হয়েছি। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের পর নটর ডেম ছিল আমার কলেজ। এরপর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং হাল্ট ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুলে মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করি। আমরা ২ ভাই ১ বোন। আমি সবার ছোট। আমার স্ত্রী মানারাত স্কুলের শিক্ষক আর আমার এক মেয়ে, এই তো আমি!
চাকরি জীবন শুরু করলেন কোথায়? এরপর— এম সাব্বির জাহাঙ্গীর: আমি প্রথম বাংলালিংকে জয়েন করি। বেশ দীর্ঘসময় কাটিয়ে ২০০৯ সালের মাঝামাঝি লাফার্জে জয়েন করি। এরপর একটি টার্ন নেই। ২০১০ সালের শেষে আমেরিকায় চলে যাই। ২০১৪ সালের শুরুতে আবার ব্যাক করি।
আমেরিকায় থাকাকালীন কী কী কাজে যুক্ত ছিলেন? এম সাব্বির জাহাঙ্গীর: আমার আমেরিকার গল্পটাও একটি বড় অধ্যায়। পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা জিসিজি মার্কেট রিসার্চ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করি। এর মাধ্যমে বিজনেস সার্ভিসেস সল্যুশন্স নিয়ে কাজ করি। এর মাধ্যমে আমরা ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে সাপোর্ট দিতাম। এরমধ্যে UBIQUE Health, Health Helm এবং আরও কিছু MassChallenge এর কিছু স্টার্টআপ কোম্পানি ছিল।
Advertisement
দেশে ফিরে যা করলেন— এম সাব্বির জাহাঙ্গীর: হ্যাঁ, ফেরার পর সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করি। যেটি এখনো করি। উপভোগ করি। পাশাপাশি গ্রো এন এক্সেলের একটি বড় প্রজেক্ট দাঁড় করানোর কাজ করেছিলাম। ২০১৪ সালে ব্র্যাকের ডিজিএম (এইচআর) হিসেবে জয়েন করলাম। সাড়ে তিন বছর ছিলাম। সেখানে থাকাকালীন এতো কাজ করেছি যে, নিজেরই অবাক লাগে। এখানে একটি বড় টার্ন আসে আমার ক্যারিয়ারে। আমার মনে হলো দেশের লোকাল কর্পোরেটগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখান থেকে নতুন আরও অনেক কিছু শেখার আছে। তাই ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিনিয়র ডিজিএম (এইচআর) হিসেবে জয়েন করি পারটেক্স স্টার গ্রুপে। দায়িত্বপ্রাপ্ত হই হেড অব অর্গানাইজেশন ডেভেলপমেন্টে। আর সম্প্রতি হেড অব এইচআর হয়েছি।
চাকরি জীবনে কোন সম্মানিত মানুষদের মেন্টর হিসেবে ভেবেছেন? এম জাহাঙ্গীর সাব্বির: হ্যাঁ। একদম ট্রু মেন্টরিং পেয়েছি বর্তমানে পারফেট্টি ভ্যান ভ্যালির এইচআর ডিরেক্টর সৈয়দা তাহিয়া হোসেন, গ্রো এন এক্সেলের সিইও জুলফিকার হোসাইন, নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর শ্যারন উলফ, হাল্ট ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুলের প্রফেসর মার্কো প্রোটানো। মানুষগুলো আমাকে বিভিন্ন সময় এমন কিছু বলেছেন বা এমন কিছু ডিসিশন নিতে সাহায্য করেছেন, যা আমাকে একটি আলাদা সত্তা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানে আপনার অধীনস্থ তরুণদের কিভাবে বিচার করেন?এম সাব্বির জাহাঙ্গীর: তরুণরা হচ্ছে আমার মূল শক্তির জায়গা। আমি অনেক সুখী হবো, দশ বছর পর যদি আমার সাবোর্ডিনেটের আন্ডারে আমি জব করি! সত্যটা বলে দিলাম। আমি স্টিভ জবসের আইডিওলজি বিশ্বাস করি, প্রচুর ফলো করি তাকে।
তরুণদের জন্য আপনার পরামর্শ কী—এম সাব্বির জাহাঙ্গীর: আমার কিছু নির্দিষ্ট পরামর্শ আছে। একটি হলো, নেভার সে নো টু ইউর অ্যাসাইনমেন্ট। তোমার ক্যারিয়ার মাত্র শুরু হয়েছে। এখনো না বলার সময় হয়নি। আরেকটি বিষয় হলো- বস বা লাইন ম্যানেজার বা সুপারভাইজরের কাছে শুধু সমস্যা নিয়ে আসবে না। সাথে কমপক্ষে দুটি সল্যুশন নিয়ে আসবে। নিজের কমনসেন্স ব্যবহার করো। যে কাজ করবে, চিন্তাটা জরুরি। শেষ কয়েকটি কথা হলো- রান ফর লার্নিং, ডোন্ট রান ফর মানি অ্যান্ড ডোন্ট কমপেয়ার ইওর স্যালারি উইথ ইওর ফ্রেন্ডস!
Advertisement
এসইউ/পিআর