খেলাধুলা

বাংলাদেশের পেসাররা ওয়ালশের কথা বুঝতেন কম!

অসাধারন মেধাবী আর নিজে একজন সফল ও বিশ্বমানের ফাস্টবোলার হবার পরও কোর্টনি ওয়ালশ প্রথাগত কোচিং শাস্ত্র জানতেন কম। এক কথায় তিনি ‘ডিগ্রিধারী’ কোচ ছিলেন না। আজকাল কোচিংয়ের নানা দিক নিয়ে পড়াশুনা করছেন অনেকে। কোচদের ডিগ্রি বাড়াতে লেভেল ১ থেকে শুর করে লেভেল ২ , ৩ এমনকি ৪ করছেন অনেকেই। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওয়ালশের সেই প্রথাগত কোচিং ম্যাথডের ওপর কোনই উচ্চতর ডিগ্রি ছিল না। তিনি ওসব করেননি।

Advertisement

শুধু নিজের মেধা, প্রজ্ঞা আর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কোচিং করিয়েছেন। আর সে কারণেই তার টিপস, পরামর্শ ও দেখিয়ে দেয়া কৌশলগুলো অন্যসব ডিগ্রিধারী ও লেভেল ৩-৪ করা অন্যসব হাই প্রোফাইল ফাস্টবোলিং কোচদের মত ছিল না। যা বাংলাদেশের বোলাররা আত্মস্থ করতে পারেননি তেমন।

এর পাশাপাশি আরও একটি বড় অন্তরায় ছিল ওয়ালশের। তিনি জন্ম সূত্রে জ্যামাইকান। তার ইংলিশ ‘একসেন্ট’ ভিন্ন। বাংলাদেশের ফাস্টবোলারদের একটা বড় অংশ তার সেই ক্যারিবীয় উচ্চারণ ঠিকমত বুঝতেন না।

এ কথা বাইরে তেমন চাউর হয়নি। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের খুব ঘনিষ্ট যারা, বিভিন্ন সময় জাতীয় দলের প্র্যাকটিস কভার করা সাংবাদিকদের জানা, ওয়ালশের ক্যারিবীয় ইংলিশ একসেন্ট সহজে বোঝা যেত না। এবং মাশরাফি ছাড়া বেশিরভাগ ক্রিকেটার তা ঠিকমত বুঝতেনও না।

Advertisement

ক্রিকেটারদের মেধা-প্রজ্ঞার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলা, বাংলাদেশ জাতীয় দলে ওয়ালশের অধীনে গত প্রায় তিন বছরে যে জন দশেক পেসার ছিলেন, তাদের মধ্যে মাশরাফি আর তাসকিন ছাড়া একটা বড় অংশ এসেছেন মফস্বল থেকে।

মাশরাফি নড়াইল থেকে উঠে আসলেও সেই কৈশোর পার হতেই অনেক বেশি স্মার্ট, চটপটে। তাসকিন তো জন্মসূত্রে রাজধানীর ছেলে। কিন্তু শাহাদাত রাজিব, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দীনদের কেউই মাশরাফি আর তাসকিনের মত অত চটপটে নন।

ক্রিকেট পাড়ায় একটা কথা শোনা যায়, মাশরাফি আর তাসকিন ছাড়া বেশির ভাগ পেসার এমনই ইংরেজি সেভাবে বোঝেনই না। আর বুঝলেও ওয়ালশের জ্যামাইকান উচ্চারণ ধরতে সমস্যা হয়েছে তাদের।

এছাড়া তার সাথে আলাপ আলোচনা এবং বোলারদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথাবার্তা বলতেও নাকি পেসারদের অনেকেরই সমস্যা হতো। ঠিক বোঝাতে পারতেন না। সব মিলে একটা ‘দূরত্ব’ বা ‘গ্যাপ’ ছিল।

Advertisement

ওয়ালশের অধীনে পেসারদের প্রত্যাশিত উন্নতি না হবার পিছনে সেটা বড় এক কারণ ছিল, বলাই যায়। ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে যদি ভাবের আদানপ্রদানটা সঠিকভাবে না হয়, তবে অনেক কথাই হয়তো মনের মধ্যে থেকে যায়। ভুল ভ্রান্তিগুলোও সেভাবে উঠে আসেনা।

এআরবি/এমএমআর/এমএস