জাতীয়

আবাস হারিয়ে নগরে মায়া হরিণ

বিশ্বের ক্ষুদ্রতম হরিণদের মধ্যে অন্যতম প্রধান বাংলাদেশের মায়া হরিণ। জলাভূমি আর পাহাড়ের আশপাশে বসবাসে অভ্যস্থ এই প্রাণী। একসময় চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় এদের বেশ দেখা মিলত। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসছে মায়া হরিণ।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, লোকালয়ে চলে আসার কারণ হলো, ক্রমাগত প্রাণীদের আবাস হারানো।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে নগরের আকবর শাহ থানার ফয়’স লেকের পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসা তেমনি একটি মায়া হরিণ আটক করে স্থানীয়রা। পরে পরিবেশ অধিদফতরের হাতে তুলে দেয়া হয় হরিণটিকে।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল (সোমবার) গভীর রাতে ফয়’স লেক পাহাড়ের উত্তর দিকে পথ হারিয়ে পাহাড়ের নিচে বসত ঘরে ঢুকে পড়ে এই হরিণ। স্থানীয়রা সেটিকে আটক করে সকালে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের খবর দেয়। সামান্য আহত মায়া হরিণকে এরপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে যান কর্মকর্তারা।

Advertisement

পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (কারিগরি) মুক্তাদির হাসান বলেন, সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা একটি হরিণ উদ্ধার করেছি। হরিণটি অসুস্থ থাকায় সেটিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষ থেকে হরিণটিকে চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হরিণটিকে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে ছেড়ে দেয়া হবে।

মায়া হরিণ বা কাকর হরিণ, যার ইংরেজি নাম Indian Muntjac or Barking Deer। এরা হরিণ প্রজাতির অন্যতম খর্বকায় ও লাজুক সদস্য। ছোট আকারে লালচে বাদামি পিংগল রঙের ফোঁটাবিহীন। এ হরিণের চলাফেরা ও জীবনধারণ খুবই চমৎকার। মায়া হরিণ ভয় পেলে বা শিকারি প্রাণী দেখতে পেলে কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে বলে এদের বার্কিং ডিয়ারও বলে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের পাহাড়ে এ প্রজাতীর হরিণ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই ক্যাম্পাস ছাড়াও পাশের সীতাকুণ্ড, মিরসরাই ও চট্টগ্রাম সেনানিবাসের পাহাড়ি এলাকায় মায়া হরিণের বসবাস আছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গাজী আজমত জানান, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল অংশ জুড়ে এবং উত্তর-পূর্ব ভারত , বাংলাদেশ , নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, ইন্দোনেশিয়া ও এর দ্বীপে মায়া হরিণের আবাসস্থল। এরা সাধারণত পানির আশপাশে বসবাস করে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

Advertisement

আবু আজাদ/জেডএ/এমএস