বরগুনায় রাস্তায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে হত্যাকারীদের যেকোনো মূল্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম ও সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।
বুধবার (২৬ জুন) বরগুনা শহরের কলেজ সড়কে দিনদুপুরে স্ত্রী আয়েশা আক্তারের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপানো এবং স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন : সন্ত্রাসীর সঙ্গে যুদ্ধ করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারলেন না স্ত্রী
Advertisement
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনাটি নৃশংস। আমি যতটা পুলিশ সূত্রে জানতে পেরেছি এবং আমাদের মিডিয়ায় খবর এসেছে- বিষয়টি অনেকটা ব্যক্তিগত সম্পর্কের, প্রেমঘটিত একটা বিষয়। সেখান থেকে ব্যক্তিগত বিদ্বেষের প্রকাশ ঘটেছে খুব নগ্নভাবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় অলরেডি একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পুলিশ অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।’
প্রধানমন্ত্রী কী নির্দেশ দিয়েছেন- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত যেকোনো মূল্যে তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন > কাঁদতে কাঁদতে স্বামীকে হত্যার বর্ণনা দিলেন মিন্নি
Advertisement
গতকাল রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের এক ইউপি সদস্যকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসব ঘটনা আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এটা কি বলা যায়? এগুলো দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’
তিনি বলেন, বরগুনার ঘটনাটা তো রাজনৈতিক নয়, নিশ্চয়ই রূপগঞ্জের ঘটনাও রাজনৈতিক নয়। ঘটনাক্রমে সে একটা রাজনৈতিক দলের সদস্য। কিন্তু ঘটনাটা তো রাজনৈতিক কারণে হয়নি। রাজনৈতিক কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি দেশের কোথাও ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, দেশে বিরোধী দল আছে কিন্তু তারা এমন কোনো পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি করতে পারেনি, যেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে। বরং তারা নিজেরা নিজেদের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত। তাদের দলীয় অফিসে তালা দিচ্ছে তাদেরই লোকেরা। এটাকে যদি অবনতি বলেন তবে অবনতি হতে পারে।
রাজনৈতিকভাবে নয়, সার্বিকভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এ রকম ঘটনা পৃথিবীর উন্নত দেশেও ঘটে। এ রকম ঘটনা ঘটে না এমন দেশ কি আছে? বলতে পারেন? সারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ঘটছে, বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়।’
বিশ্বজিৎকেও এভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল, সেই বিচার এখনও চলছে। আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হলে এমন ঘটনা কি আবার ঘটত বলে আপনি মনে করেন? জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যার একটা রায় তো হয়েছে। কীভাবে বলেন বিচার হয়নি? বিচার কার্যক্রম চলছে। অনেকের ফাঁসির আদেশ হয়েছে, যাবজ্জীবন হয়েছে। সরকারের নমনীয় অবস্থানের কোনো প্রমাণ এখানে নেই।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিচারটি নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে যাবে। তারপর আপিল বিভাগে যাবে, সবকিছু মিলিয়ে তো এটা একটা বিচার প্রক্রিয়ার ব্যাপার। এখানে সরকার তো কোনো ছাড় দেবে না।’
আরএমএম/এনএফ/এমএসএইচ/পিআর