আমের কোনো নাম নেই। নেই আমের অস্তিত্বও। তবুও জুসের বোতলের গায়ে লেখা ‘সুস্বাধু আমের জুস’। আসলে এ জুস তৈরি করতে প্রয়োজন শুধু ক্যামিকেল ও রং।
Advertisement
শুধু ক্যামিকেল ও রং দিয়ে ১ লিটার জুস তৈরি করতে কোম্পানি মালিকের খরচ হয় মাত্র ২৫ টাকা। আর এ জুস ডিলারের কাছে বিক্রি হয় প্রতি লিটার ৪০ টাকায়। ডিলার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে ৬০ টাকায় প্রতি লিটার। আর সাধারণ ক্রেতরা সেই জুস ক্রয় করে ৮০ টাকায়।
অধিকা লাভের নেশায় গড়ে ওঠা ভেজাল জুস তৈরির এ কারখানায় অভিযান চালায় র্যাব-১১ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। রোববার সন্ধ্যায় সাদিয়া ফুড অ্যান্ড ব্রেভারেজ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামক ওই ফ্যাক্টরিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও র্যাব অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার ভেজাল জুস ধ্বংস করে। গ্রেফতার করে প্রতিষ্ঠানটির ৪ কর্মকর্তাকে।
র্যাব জানায়, নকল জুস তৈরির কারখানার খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল উত্তর পাড়া এলাকায় সাদিয়া ফুড অ্যান্ড ব্রেভারেজ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজে অভিযান চালায় তারা। এ সময় গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে।
Advertisement
গ্রেফতাররা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার নাজমুল আলম (৩৫), কেমিস্ট রাজন হোসেন শিকদার (২২), মো. বিল্লাল হোসেন (২৭) এবং এনায়েত হোসেন (৩৪)।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম গ্রেফতারদের ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সময় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তবে ঘটনার সময় প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন না এর মালিক মো. আলমগীর হোসেন। তার বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা করা হবে এবং তাকে আটকের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১র অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, নকল এই জুসে নেই কোনো আমের অস্তিত্ব। ১৫ প্রকার ক্যামিকেলের সমন্বয়ে এই নকল জুস তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবথেকে ক্ষতিকারক ক্যামিকেল হচ্ছে সোডিয়াম বেনজয়েড। যা মানবদেহের জকৃতকে একসময় বিকল করে দেয়। পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটি এসব নকল জুস প্রতিনিয়ত বাজারে সরবরাহ করে আসছিল।
Advertisement
হোসেন চিশতী সিপলু/এফএ/জেআইএম