জাতীয়

সব রুটে পর্যাপ্ত বাস নিশ্চিতের দাবি

যারা নিয়মিত গণপরিবহনে চলাচল করেন তাদের হয়রানি ও দুর্ভোগ চরমে উল্লেখ করে রুট পারমিটের শর্ত মোতাবেক সব রুটে পর্যাপ্ত বাস নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)।

Advertisement

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সড়ক দুর্ঘটনা, ভাড়াসহ যাত্রী দুর্ভোগ ও যানজট কমানোর পূর্বশর্ত রুট পারমিটের শর্ত মোতাবেক পর্যাপ্ত বাস নিশ্চিত কর’ দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যানজটে নাকাল সবাই। সাধারণ মানুষ যারা নিয়মিত বাসে চলাচল করেন তাদের হয়রানি ও দুর্ভোগ চরমে। বিভিন্ন কোম্পানি যে পরিমাণ বাস চলাচলের শর্তে রুট পারমিট নেয়, তার চেয়ে রাস্তায় অনেক কম বাস চালায় তারা। সেগুলোর মানও অনেক নিম্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে বাসের সংখ্যা কমিয়ে সঙ্কট আরও বাড়িয়ে দেয়। পিক আওয়ারে বা বৃষ্টির সময় যাত্রীদুর্ভোগ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। যাত্রীদের চরম দুর্ভোগকে বাস কোম্পানিগুলো সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে নানা অজুহাতে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়।

তারা বলেন, বাস স্বল্পতার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা রাস্তার মাঝখানে ওঠতে-নামতে বাধ্য হন। অনেকে দুর্ভোগ এড়াতে বা সময়মত পৌঁছানোর জন্য অ্যাপস্-ভিত্তিক মটর সাইকেল, ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন। এতে মোটর সাইকেল এবং ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানজটও। বিভিন্ন রুটে পর্যাপ্ত সংখ্যক ভাল বাস থাকলে অনেকেই এ জাতীয় বাহন ব্যবহার না করে পাবলিক বাসে চলাচল করবে। তাতে রাস্তায় ছোট যানের সংখ্যা হ্রাস পাবে এবং যানজট অনেকাংশই কমে যাবে। সেই সঙ্গে রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরানো ও বাস ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে এবং যানজট লাঘব হবে। কাজেই বিভিন্ন রুটে পর্যাপ্ত সংখ্যক বড় বাস নিয়মিত চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। যে সমস্ত কোম্পানি পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস রাস্তার চালু রাখতে ব্যর্থ হবে তাদের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। সেই রুটে বিআরটিসি তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস চালু রাখবে।

Advertisement

বক্তারা আরও বলেন, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত বাস না থাকায় অ্যাপসভিত্তিক যানবাহনের ব্যবহার দিনি দিন বাড়ছে এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও পরিবহন ব্যয় বাড়ছে, বাড়ছে যানজট ও নৈরাজ্য। বিভিন্ন রুটে যে পরিমাণ বাস চালানোর কথা তা চালানো হচ্ছে না। একটি সিন্ডিকেট পুরো পরিবহন সেক্টরকে দখল করে নিয়েছে। এই সিন্ডিকেট হাইকোর্টের রুলকেও পরোয়া করে না। তাদের জিম্মায় চলে যাচ্ছে কোম্পানিগুলোর বাস। যে কারণে তারা যাত্রীদের সঠিক সেবা দিতে পারছে না। বিভিন্ন কোম্পানি যে পরিমাণ ও যে মানের বাস চালানোর শর্তে রুট পারমিট পায় তার চেয়ে অনেক কম এবং নিম্নমানের বাস চালায়। যেখানে ৫০টি বাস চালানোর কথা সেখানে তারা চালাচ্ছে মাত্র ১০টি। কম বাস চালানোর কারণে যাত্রীদের গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

তারা বলেন, গণপরিবহনের মানোন্নয়নে ও দক্ষভাবে পরিচালনার জন্য অভিভাবক সংস্থা রাখা ও কর্মরত সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় দরকার। যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে তদারকি ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ আদায় প্রতিরোধ করতে হবে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, বানিপার সভাপতি প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সেভ দ্যা রিভার্সের জাতীয় কমিটির সদস্য শাকিল ওসমান প্রমুখ।

এএস/এমএমজেড/এমকেএইচ

Advertisement