‘আমি তাকে দুবাই যেতে নিষেধ করি। এর মধ্যে তার প্রথম স্বামী বাসায় আসে। এতে রেগে গিয়ে স্ত্রী হাসি বেগমকে (২৭) গলা টিপে ধরি। এতে সে মারা যায়। কেউ যাতে বুঝতে না পারে তাকে আমি মেরে ফেলেছি এজন্য হত্যার আলামত মুছতে তার লাশে আগুন ধরিয়ে দেই।’
Advertisement
বুধবার রাজধানীর মুগদার ব্যাংক কলোনি এলাকায় স্ত্রী হাসি বেগমকে হত্যা করে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী কমল হোসেন। এরপর মুগদা থানা পুলিশ হাসি বেগমের লাশ উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার কমলকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মুগদা থানা পুলিশ। এসময় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুগদা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাসুদুর রহমান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মিল্লাত হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। জবানবন্দিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জবানবন্দিতে কমল আরো বলেন, স্ত্রী হাসি বেগমের আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল। সে ঘরে দুটা সন্তান আছে। এরপর আমার সাথে তার বিয়ে হয়। আমাদের ঘরে শিশির নামে সাত বছরের একটি সন্তান রয়েছে। আমার স্ত্রী আগে মালয়েশিয়া ও দুবাই হোটেলে নাচ-গান করতো। এবার আসার পর সে আবার দুবাই যেতে চায়। ভিসা পাসপোর্টও রেডি করে।
Advertisement
আমি তাকে দুবাই যেতে বার বার নিষেধ করি। কিন্তু কিছুতেই সে তা মানছিল না। ঘটনার আগের দিন তার আগের স্বামী ও শাশুড়ি আমার বাসায় আসে। একদিকে সে বিদেশ যাবে অপরদিকে তারা আসলো। আমি তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। এতে আমি প্রচুর রেগে যাই। রাগেবশে আমি তার গলা চেপে ধরি। এতে সে মারা যায়। তখন আমি কি করবো তা বুঝতে পারছিলাম না। লাশের আলামত মুছে ফেলতে আমি তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেই। বাসায় তেলাপোকা-ছাড়পোকা মারার জন্য কেরোসিন আনা ছিল। সেই কেরোসিন গায়ে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেই।
মুগদা থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশরাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণয় কুমার সাহা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে গলাটিপে হত্যার পর আলামত মুছে ফেলতে স্ত্রী হাসি বেগমের মরদেহে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন পাষণ্ড স্বামী কমল।
তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। বিস্তারিত জানতে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য হাসির মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
জেএ/এসএইচএস/পিআর