কৃষি ও প্রকৃতি

মাঠে এবার বেগুনি রঙের ধান!

শেরপুরের নকলা উপজেলার বারইকান্দি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ভেদিকুড়া গ্রামে দুই কৃষকের দু’টি প্লটে বেগুনি রঙের ধানগাছ কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। বেগুনি রঙের ধানগাছ দেখে কেউ কেউ জিজ্ঞেস করছেন, ধানের এমন হাল হয়েছে কেন?

Advertisement

কৃষি কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, এ ধানের নাম ‘পার্পল লিফ রাইস’। প্রথম এ ধানের আবাদ শুরু হয় গাইবান্ধায়। ধানের গায়ের রঙ সোনালি ও চালের রঙ বেগুনি। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটা কম। এর জীবনকাল ১৪৫-১৫৫ দিন। ফলনও ভালো। একর প্রতি ফলন ৫৫-৬০ মণ। অন্য ধানের তুলনায় এটি মোটা তবে পুষ্টিগুণ অনেক। ভাত খেতেও সুস্বাদু। গাইবান্ধার পর কুমিল্লা ও বগুড়ায় এ জাতের ধান চাষ করতে দেখা গেছে। এবার শেরপুরে এ ধানের চাষ পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে।

নালিতাবাড়ীর সরোয়ার আলম কুমিল্লার এক কৃষকের কাছ থেকে বেগুনি ধান সংগ্রহ করেন। পরে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে কাকরকান্দি সড়ক সংলগ্ন ভেদিকুড়া গ্রামের কৃষক শহীদুল আলমের ৫ শতক জমিতে এ ধান চাষ করা হয়।

> আরও পড়ুন- শিলাবৃষ্টিতে ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি, ঋণগ্রস্তরা দিশেহারা

Advertisement

কৃষক শহিদুল আলম বলেন, ‘ধান দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে। অনেকেই বীজ চেয়েছেন। শুরুতে সবুজের মধ্যে ধূসর রঙের ক্ষেত দেখে অনেকেই মনে করতেন, ক্ষেতটি অযত্নে মরে গেছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধানগাছের পাতা গাঢ় বেগুনি রং ধারণ করেছে।’

নকলার গণপদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুর রহমান আবুল জানান, গত বছর পত্রিকায় সফলতার খবর দেখে ওই ধান চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বারইকান্দি গ্রামের সড়কের ধারে তার বেগুনি ধানক্ষেতটির পাশে প্রতিদিনই লেগে থাকে পথচারীদের ভিড়।

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘এ ধান চাষে উপজেলা কৃষি বিভাগ সার্বিক পরামর্শ দিয়েছে। ধানক্ষেতটি বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আশা করছি অন্য ধানের তুলনায় ফলন ভালো হবে।’

নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘ধানের ফলন ভালো হলে এর বিস্তার ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য কৃষকও বেগুনি রঙের ধান সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।’

Advertisement

> আরও পড়ুন- জনপ্রিয় হচ্ছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ

নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরীফ ইকবাল বলেন, ‘এলাকায় বেগুনি জাতের ধান নতুন। তাই কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফসল কাটার পর পুষ্টিগুণ যাচাই করে কৃষকদের মাঝে বিস্তার ঘটানো হবে।’

শেরপুর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘বেগুনি রঙের এ ধান বিদেশি নয়। আগে অন্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার শেরপুরে হচ্ছে। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে।’

হাকিম বাবুল/এসইউ/পিআর