খেলাধুলা

ভুয়া ক্যাচের অভিনয়ে আবারও বিতর্কিত পাকিস্তানি শেহজাদ

ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মের রয়েছেন, সবশেষ ছয়টি স্বীকৃত ম্যাচের ৫টিতেই পেয়েছেন ফিফটির দেখা। তবু প্রশংসার চেয়ে নিন্দাই বেশি শুনছেন পাকিস্তানের ড্যাশিং ওপেনার আহমেদ শেহজাদ। তবে সেটি নিশ্চয়ই ব্যাটিংয়ের কারণে নয়।

Advertisement

২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ওয়ানডেতে লঙ্কান ইনিংসের ৪০তম ওভারে ইয়াসির শাহর বোলিংয়ে ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে লাহিরু থিরিমান্নের সহজ একটি ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন শেহজাদ। তবে তিনি নিজে দাবী করেছিলেন ক্যাচটি ধরেছেন ঠিকভাবেই।

পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল তার হাতে জমা পড়লেও সেটি ছুটে গিয়ে মাটিতে পড়েছিল বেশ কিছুক্ষণ সময়। যা গড়াতে গড়াতে শেহজাদের নাকে-মুখে লেগে আটকে যায় হাতের ফাঁকে। সেটিকেই 'ক্লিন ক্যাচ' দাবী করে উদযাপন শুরু করেন শেহজাদ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রিকেট বিশ্বের সমালোচনার শিকার হন শেহজাদ।

চার বছর পর আবারও একই ঘটনা ঘটিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী শেহজাদ। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নয়।বুধবার পাকিস্তানের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট 'পাকিস্তান কাপে' খাইবার পাখতুনসের বিপক্ষে ফেডেরাল এরিয়াসের হয়ে খেলতে নেমে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি।

Advertisement

ম্যাচের শেষ ওভার খাইবারের প্রয়োজন ছিলো ৫ রান। প্রথম দুই বলে দুই রান নিলে ৪ বলে চাহিদা নেমে আসে তিনে। ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কার জন্য ব্যাট ঘোরান খুশদিল শাহ। কিন্তু শটে জোর না থাকায় তা খুঁজে নেয় মিড উইকেটে দাঁড়ানো আহমেদ শেহজাদের 'অনিরাপদ' হাত।

Review please #PakistanCup pic.twitter.com/EdXnFKyp3b

— Saj Sadiq (@Saj_PakPassion) April 3, 2019

অনিরাপদ বলা হলো কারণ সহজ ক্যাচটিও ধরতে পারেননি তিনি। বল হাত ফসকে পড়ে যায় মাটিতে, যা বুঝতে পারেন শেহজাদ নিজেও। তবু আম্পায়ারদের কাছে দুই হাতে ইশারা করেন থার্ড আম্পায়ারের কাছে যাওয়ার জন্য। টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায় ক্যাচটি ধরতেই পারেননি শেহজাদ।

পরে ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে খাইবারের জয় নিশ্চিত করেন সোহেল খান। আগে ব্যাট করে ফেডেরাল সব উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ২৬৯ রান। ২ বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় খাইবার। ম্যাচের 'খলনায়ক' শেহজাদের ব্যাট থেকে আসে ৬০ বলে ৫৬ রানের ইনিংস।

Advertisement

বুধবার শেহজাদের দল হারলেও চার বছর ঠিকই জিতেছিল পাকিস্তান। সে ম্যাচে খলনায়ক থেকে নায়ক হয়েই দলকে জেতান শেহজাদ। শেহজাদ যখন থিরিমান্নের ভুয়া ক্যাচের নাটক করেন, তখন তার রান ৮৪। পরে ৯০ রান করে সেই ইয়াসির শাহর বোলিংয়ে শেহজাদের হাতে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন থিরিমান্নে।

লঙ্কানদের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ২৫৬ রানে। যা তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ৫৫ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯০ বলে ৯৫ রান করেন শেহজাদ, জেতেন ম্যাচসেরার পুরষ্কার। তবু আজও শেহজাদের সেই ভুয়া ক্যাচের আলোচনা উঠলেই নিন্দায় ভাসান ক্রিকেটপ্রেমীরা।

অবশ্য পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের এমন ভুয়া ক্যাচের নাটক সেবারই প্রথম নয়। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিখ্যাত মুলতান টেস্টে পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক রশিদ লতিফও করেছিলেন একই কাণ্ড। অলক কাপালির একটি ক্যাচ মাটি থেকে তুলেও দাবী করেন আউটের। টিভি আম্পায়ারের কাছে যাওয়া হয়নি বলে সে যাত্রায় ঠিকই আউট পেয়ে যান লতিফ। কিন্তু প্রায় দেড় দশক পরে এসেও সে ঘটনার জন্য নিন্দার ঝড়ে ভাসেন রশিদ লতিফ।

এসএএস/জেআইএম