ধর্ম

নিউজিল্যান্ডের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ও নিখোঁজ যারা

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইটসার্চের দুই মসজিদে সন্ত্রাসী আক্রমণে যারা নিহত হয়েছেন, সেসব নিরাপরাধ ব্যক্তিদের ছবি, নাম ঠিকানা ও হৃদয়গ্রাহী ঘটনা তুলে ধরা হলো-

Advertisement

মুকাদ ইবরাহিম

৩ বছর বয়সী শিশু মুকাদ ইবরাহিম। সবচেয়ে কম বয়সী। আল-নূর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে সে আর ফিরে আসেনি। সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাদ যায়নি এ ছোট্টি শিশু।

জুলফারমান ও তার ছেলে অ্যাভরোজ

Advertisement

২ মাস আগে ক্রাইস্টচার্চে আসা জুলফারমানের স্ত্রী ম্যারির ভাষ্য মতে, সন্তানকে বাঁচাতে গিয়েও পারেনি। স্বামী ও সন্তান দু’জনই সন্ত্রাসীদের বুলেটে লিনউড মসজিদে প্রাণ হরান।

আব্দুল্লাহ দিরি

সন্ত্রাসী হামলা নিহত মাত্র ৪ বছরের আরেক শিশু আব্দুল্লাহ দিরি। মিনিয়াপলিসের দার আল-হিজরা মসজিদের মুয়াজ্জিন আব্দুর রহমান হাশি জানান, তার ৪ বছরের ভাতিজা এ হামলা নিহত হয়। ১৯৯০ সালে তাদের পরিবার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সোমালিয়া থেকে পালিয়ে নিউজিল্যান্ড আসে।

হেবা সামি

Advertisement

১২ বছরের হেবা সামি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় আহত হন তার বাবা। ১২ বছরের হেবা সামিসহ সে তার পরিবারের ৫ সদস্যকে হারায়।

সায়িদ মিলন

১৪ বছরের কিশোর সায়িদ মিলন। মা ও বন্ধুদের সঙ্গে আল-নূর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় সে।

খালিদ মোস্তফা ও ছেলে হামজা

খালিদ মোস্তফা সিরিয়া থেকে পালিয়ে নিউজিল্যান্ড আসে। দুই ছেলে হামজা ও জিয়াদ। খালিদ মোস্তফা ও ১৬ বছর বয়সী হামজা সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়। ১৩ বছর বয়সী জিয়াদ এ হামলায় আহত হয়।

নাঈম রশিদ ও ছেলে তালহা

সন্ত্রাসী হামলায় আক্রমণকারীকে প্রতিহত করার চেষ্টাকারী নাঈম রশিদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার ২১ বছরের ছেলে তালহাও সন্ত্রাসী হামলা নিহত হয়। পেশায় ডাক্তার নাঈম রশিদ স্বপরিবারে পাকিস্তান থেকে নিউজিল্যান্ড আসেন।

আনসি কারিপাকুলাম আলিবাভা

২৫ বছরের যুবতী আনসি কারিপাকুলাম আলিবাভা নিহত হয়েছে কিনা নিশ্চিত নয়। তবে ভারত থেকে নিউজিল্যান্ডে আসা আনসির কোনো খোঁজ পাচ্ছে না তার স্বজনরা।

ভোরা রমিজ

২৮ বছর বয়সী ভোরা রমিজ নিহত হয়েছে কিনা জানা না গেলে এখনো তার হদিস মেলেনি।

ফারহাজ আহসান

অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি প্রাপ্ত পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ৩০ বছরের যুবক ফারহাজ আহসান। সন্ত্রাসী হামলার স্পট থেকে অনুপস্থিত রয়েছে সে।

মোজাম্মেল হক

বাংলাদেশ থেকে উচ্চতর শিক্ষা নিতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ডেন্টিস্ট মোজাম্মেল হক। তার কোনো সন্ধান পাওয়া না গেলেও কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত ঘোষণা করেছে।

আত্তা ইলিয়ান

কুয়েতে জন্ম নেয়া ৩৩ বছরের আত্তা ইলিয়ান নিউজিল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল দল এবং ক্যানটারবারি ফুটবল দলের সদস্য। আত্তা ইলিয়ানও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে নিহত হন।

সৈয়দ জাহানদাদ আলী

পাকিস্তানের ৩৪ বছরের সৈয়দ জাহানদাদ আলী নিউজিল্যান্ডের আল-নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন।

হোসাইন আল উমরি

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৩৬ বছরের হোসাইন আল উমরি আল-নূর মসজিদের সন্ত্রাসী হামলা নিহত হন।

ওসামা আদনান

ফিলিস্তিন থেকে মিসরে পালিয়ে যাওয়া ৩৭ বছরের ওসামা আদনান নিউজিল্যান্ডে স্থায়ী হওয়ার চিন্তা করেন। আল-নূর মসজিদের সন্ত্রাসী হামলা থেকে শেষ রক্ষা হয়নি তার।

কামেল দারভিশ

৩৯ বছরের কামেল দারভিশ এখনো নিখোঁজ রয়েছে। পরিবার ও নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছেও তার কোনো তথ্য নেই।

হারুন মাহমুদ

৪০ বছরের চিকিৎসক হারুন মাহমুদ আল-নূর মসজিদের সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত হয়ে নিহত হন। দুই সন্তানসহ পরিবার নিয়ে ২০১৪ সালে ক্যান্টারবারি থেকে ক্রাইস্টচার্চে চলে আসেন। পাকিস্তানি এ চিকিৎসক ক্যান্টারবারি কলেজের সহকারি পরিচারক ছিলেন।

হোসনে আরা পারভীন

হুইল চেয়ারে বসা স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হন হোসনে আরা পারভীন। বাংলাদেশি এ পরিবারে স্বামী বাঁচলেও হোসনে আরা পারভীনকে জীবন দিতে হয়েছে।

মুহাম্মদ ইমরান খান

ভারতের ৪৭ বছর বয়সী ইমরান খান লিনউড মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা নিহত হন।

আমজাদ হামিদ

ফিলিস্তিনের বংশোদ্ভূত ৫৭ বছরের আমজাদ হামিদ দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নিউজিল্যান্ড বসবাস করেন। পেশায় চিকিৎসক আমজাদ হামিদ আল-নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন।

আব্দুল ফাতাহ কাসেম

ফিলিস্তিনি আব্দুল ফাতাহ কাসেম (৫৯) এখনো নিখোঁজ রয়েছে। নিউজিল্যান্ড মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এ সদস্য সন্ত্রাসী হামলার পরে আর বাড়ি ফেরেনি।

লিন্ডা আর্মাস্ট্রং

লিন্ডা আর্মাস্ট্রং (৬৫) সন্ত্রাসী হামলা নিহত হলে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন সেই ব্যক্তি যাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন লিন্ডা আর্মাস্ট্রং।

আলী আল-মাদানি

ফিলিস্তিনের ৬৬ বছরের বৃদ্ধ আলী আল-মাদানি স্ত্রীসহ সন্ত্রাসী হামলা নিহত হন। তিনি ও তার স্ত্রী আল-নূর মসজিদ পরিদর্শনে এসেছিলেন।

দাউদ নাবি

৭০ বছরের বৃদ্ধ দাউদ নাবি। যিনি সর্ব প্রথম আক্রমণের শিকারে পরিণত হয়ে নিহত হন। আক্রমণকারী আল-নূর মসজিদে সর্বপ্রথম তাকেই ‘হ্যালো ব্রাদার’ বলে আক্রমণ করে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০ নিহত হয়েছে বলে জানা যায়।

লিলিক আব্দুল হামিদ

লিলিক আব্দুল হামিদ এখনো নিখোঁজ। সন্ত্রাসী হামলার পর সে আর পরিবারের কাছে ফিরে যায়নি। আর তার পরিবার এখনো তার কোনো সন্ধান পায়নি।

আশরাফ আলি

ফিজি থেকে আগত আশরাফ আলি আল-নূর মসজিদের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন।

এখন পর্যন্ত ৫০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও প্রকৃতপক্ষে কতজন নিহত ও নিখোঁজ রয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এমএমএস/পিআর