ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজন। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনছেন বলে জানিয়েছেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে নগরীর ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজারে দেখা যায়, বাজারে প্রচুর পরিমাণ সবজি ও মাছ নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। কিছুটা কম দামে পেতে ক্রেতারা একজন থেকে আরেকজনের কাছে ছুটছেন।
বাজার ঘুরে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহের তুলনায় বরবটি, বেগুন, ধুন্দল, পটোল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। অন্যান্য সবজি স্থিতিশীল অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ৬০, বেগুন ৫০, ধুন্দল ৪০, পটোল ৪০, চিচিঙ্গা ৫০, ঝিঙে ৫০, গাঁজর ৫০, করলা ৪০, সজিনা ডাঁটা ৭০, টমেটো ৫০, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা কেজি এবং ফুলকপি ৫০ টাকা পিস ও লেবু ১০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
আকার ও জাতভেদে বেশিরভাগ মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে কালবাউশ ২৪০-৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ২৬০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে মৃগেল ২৪০-২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ২৫০-২৮০, ২৭০-৩৪০ টাকার রুই-কাতলা ২৮০-৩৫০ এবং ২০০-২৫০ টাকার সিলভার কার্প ২১০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া ১৭০-২৫০, পাঙাশ ১৭০-২০০, কৈ ২৩০-৩৪০, শিং ২৫০-৫৭০, পাবদা ৩২০-৩৮০, শোল ৫৪০-৮২০, ট্যাংরা ৪৭০-৭৬০, গুলশা ৩৫০-৯৫০ এবং টাকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৫৩০ টাকা কেজি দরে।
Advertisement
তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ১০ টাকা কমে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে অন্যান্য মুরগি, ডিম, গরু ও খাসির মাংসের দাম।
বর্তমানে সোনালি মুরগি ২৯০ টাকা, সাদা কক ২৭০ টাকা কেজি, ফার্মের মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালি, হাঁসের ডিম ৬০ টাকা হালি খাসির মাংস ১১৫০ এবং গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ কেজি।
সবজি কেনার সময় কথা হয় আব্দুল আওয়াল নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রত্যেকটি বিক্রেতা ডালা ভর্তি করে বিপুল পরিমাণ সবজি নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু তারা বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। বিক্রেতাদের নির্ধারিত দামেই বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে।’
মাছ কিনতে আসা আরাফাত হোসেন বলেন, বাজারে মাছের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবুও সরবরাহ কমের অজুহাতে দাম বাড়িয়েছেন অসাধু বিক্রেতারা। দাম কমাচ্ছেন না তারা।
Advertisement
সবজি বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে করেই বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। ফলে দাম কিছুটা বেড়েছে। দাম বাড়ানোর পেছনে আমাদের কারসাজি নেই।’
মাছ বিক্রেতা জয়নাল মিয়া বলেন, সব বিক্রেতারা যে দামে বিক্রি করছেন, আমিও একই দামে বিক্রি করছি। পাইকাররা দাম বাড়ানোয় আমরাও দাম বাড়িয়েছি।
তবে আগের দামেই খুচরা বিক্রেতাদের কাছে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান একই বাজারের পাইকার আসাদুল হক। তিনি বলেন, আমরা আগের দামেই খুচরা বিক্রেতাদের কাছে মাছ বিক্রি করছি। খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছে মনমতো দামে বিক্রি করছেন। এতে ক্রেতারা ঠকলেও পাইকারদের কিছুই করার নেই।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, বাজারে অভিযান চালানো হবে। যৌক্তিক দামে বিক্রি না করার প্রমাণ মিললে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এসআর/জেআইএম