খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছে চাল বিতরণের তথ্য মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি’র আওতায় সারাদেশে ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এসব পরিবারকে প্রতি মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে।
Advertisement
সেবাটি আরও সহজ করতে আগে থেকেই মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে চাল বিতরণের সময় ও স্থান জানিয়ে দেয়া হবে বলে খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান। খাদ্য বিভাগের ইনোভেশন টিমের আইডিয়ার ভিত্তিতে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
আগামী মাসে (মার্চ) ফের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর সদর উপজেলাসহ আট বিভাগের মোট আট উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীদের মোবাইলে এসএমএস দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আরিফুর রহমান অপু জাগো নিউজকে বলেন, ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীদের এসএমএস দেয়ার আইডিয়াটি মূলত ইনোভেশন টিমের। আগামী ২১ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্কশপের পর বিস্তারিতভাবে সেটা অফিসিয়ালি আমাদের দেবে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীরা চাল নিতে এসে ঘুরে চলে যান। তিনি যেদিন আসেন ওইদিন হয়তো তার চাল বিতরণের সময় নয়। আবার এমনও দেখা যায়, তিনি লাইনে দাঁড়িয়েছেন, কিন্তু তাকে বলা হলো, আজ না কাল আসেন। নতুন ব্যবস্থাটি চালু হলে সুবিধাভোগীরা জানতে পারবেন কবে এবং কোথায় তাকে চাল দেয়া হবে। এতে তার ভোগান্তিতে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।’
মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা ভাগ করে করে, স্লট করে করে চাল বিতরণ করব। সেই তথ্যটাই এসএমএসের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের জানিয়ে দেয়া হবে যাতে সার্ভিসটা আরও সহজ হয়।’
‘ইনোভেশন টিমের এ আইডিয়াকে আমরা অ্যাপ্রেসিয়েট করেছি। প্রথমে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কিছু স্থানে করব। পরে সবাই যদি এটা গ্রহণ করে তবে পর্যায়ক্রমে সারাদেশেই এটা আমরা করব’- বলেন তিনি।
২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় খাদ্যবান্ধব এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পল্লী অঞ্চলের কর্মাভাবকালীন মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর- এ পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু মাঝখানে সরকারি খাদ্যশস্যের মজুদ কমে যাওয়ায় বন্ধ ছিল এ কর্মসূচি।
Advertisement
১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরুর পর তালিকায় সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম থাকা, বাইরে বেশি দামে চাল বিক্রি করা, ওজনে কম দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুয়া সুবিধাভোগীদের কার্ড বাতিল, ডিলারশিপ বাতিল, ডিলারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও বিভাগীয় মামলা, জরিমানাসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়।
২০১৭ সালের শুরুর দিকে ৫০ লাখ উপকারভোগীর তালিকাও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে খাদ্য বিভাগ।
সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হয়। এ কর্মসূচির আওতায় সাধারণ চাল ছাড়াও পুষ্টি চালও বিতরণ শুরু করছে সরকার।
ওই সময় ঢাকার কেরানীগঞ্জ, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, গোপালগঞ্জের মোকছেদপুর, ফরিদপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও বিজয়নগর, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এবং বরগুনার বামনা এ আট উপজেলায় পুষ্টি চাল দেয়া হয়।
আরএমএম/এমএমজেড/এমএস