সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে স্থানীয় মাতব্বরদেরকে মেয়ের বিয়ের দাওয়াত না দেয়ায় তিন মাস একঘরে রাখার পর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমাজে ফিরেছে অসহায় এক পরিবার।
Advertisement
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ঘিলাছাড়া ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামে গিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা হক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পর বন্দি হয়ে থাকা পরিবারটির একঘরে জীবনের অবসান হয়।
জানা গেছে, উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের আব্দুস সালাম সামার্থ্য না থাকায় শ্বশুর বাড়ির সাহায্যে মেয়েকে বিয়ে দেন। আর সেই বিয়েতে গ্রামের প্রভাবশালীদের দাওয়াত দিতে না পারায় তার পরিবারকে একঘরে করে রাখে পঞ্চায়েত কমিটি।
এ বিষয়ে আব্দুস সালাম বলেন, আমি গরিব মানুষ। স্ত্রী, ৩ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে ৬ জনের সংসার। গত অক্টোবর মাসে বড় মেয়েকে কুলাউড়ায় মামার বাড়িতে নিয়ে বিয়ে দেই। বিয়ের সব খরচা মেয়ের মামার বাড়ির লোকজন করার কারণে আমি আমার গ্রামের মানুষদের ঠিকমতো দাওয়াত দিতে পারিনি। বিয়ের কিছুদিন পর আমাদের ওয়ার্ড মেম্বার লাল মিয়া আমাকে জানান মসজিদ কমিটির সভাপতি আখলাছ মিয়া ও সেক্রেটারি লকুছ মিয়া আমাকে পঞ্চায়েত থেকে বের করে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
Advertisement
স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়েশা হক ঘটনাস্থলে যান। সরেজমিনে তদন্ত করে ও কোরবানপুর গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে কোরবানপুর মসজিদ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে একঘরে করার অপরাধে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি লকুছ মিয়াকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা হক বলেন, মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি লকুছ মিয়াই আব্দুস সালামকে একঘরে ঘোষণা করতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন। তাই তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কাউকে যেন এ ধরনের জঘন্য শাস্তি গ্রাম্য মাতব্বররা না দেন সে ব্যাপারে তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
ছামির মাহমুদ/এফএ/এমএস
Advertisement