আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ইচ্ছুক প্রার্থীদের জমা দেয়া সম্পদের তথ্য বিবরণী এবং তাদের পরিবারের অর্জিত সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
Advertisement
নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়েছে। সোমবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ দাবি জানান।
টিআইবির দাবি, কোনো প্রার্থীর সম্পদের তথ্য বিবরণীতে এবং পরিবারের সম্পদের হিসাবে অসামঞ্জস্যতা বা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা যেন গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নির্বাচনের আগে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীরা তাদের আয়-ব্যয়ের বা সম্পদের বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেন, যা জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার স্বচ্ছতা নিশ্চিতে গুরুত্ববহ। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অনেক প্রার্থী বা তার পরিবারের অর্জিত সম্পদ পূর্ববর্তী নির্বাচনে জমা দেয়া সম্পদের হিসাবের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আইন ও বিধিসম্মত কি-না তা খতিয়ে দেখা অপরিহার্য। নির্বাচন কমিশনের উচিত এসব সম্পদ বিবরণীর যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করে সম্পদের উৎস সম্পর্কে নিরপেক্ষভাবে নিশ্চিত হওয়া এবং আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটে থাকলে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
Advertisement
‘পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনেরও উচিত প্রার্থীদের ঘোষিত সম্পদের উৎস অনুসন্ধান করে বাস্তবের সঙ্গে কোনো ধরনের অসামঞ্জস্যতা বা অন্য কোনো প্রকার অনিয়ম পাওয়া গেলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিচয় বা দলীয় অবস্থান নির্বিশেষে এবং কোনো ধরনের অনুরাগ-বিরাগের বশবতী না হয়ে কাজ করতে হবে। কোনো বিশেষ দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ত্ব বা বৈষম্য করা হলে তা হবে অবিমৃশ্যকারিতা’ বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।
প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের পবিবারের সদস্য এবং নামে-বেনামে অর্জিত অবৈধ সম্পদের বিষয়েও তদন্তের জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘প্রার্থীদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ও অর্জিত সম্পদের উৎস সম্পর্কে খতিয়ে দেখা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পূর্বের তুলনায় সম্পদ বৃদ্ধির হারের তারতম্য খতিয়ে দেখার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারের ব্যাপকতা চিহ্নিত করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য অপরিহার্য।’
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সম্প্রতি প্রার্থীদের সম্পদ বিবরণী খতিয়ে দেখার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। তবে আমরা মনে করি জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রার্থীদের সম্পদের উৎস ও তুলনামূলক বৃদ্ধির হার যাচাই-বাছাই করে কোনো অনিয়ম বা অসামঞ্জস্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভোটারদের সামনে তার দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরা জরুরি। কারণ আইনপ্রণেতা হিসেবে কেউ যদি অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে তার সংসদ সদস্য হওয়ার কোনো বৈধতা ও নৈতিক যোগ্যতা থাকতে পারে না বলেই আমরা মনে করি। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনেরও উচিত হবে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সন্দেহভাজনদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে সমন্বিত ও সহযোগিতামূলক তদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচনী আইন ও বিধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।’
Advertisement
জেইউ/এনডিএস/পিআর