সরকারের মেয়াদ পূর্তির আগেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। শুক্রবার এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে তিনি সাক্ষর করেছেন বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
Advertisement
দেশটিতে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই মেয়াদ পূর্তির দুই বছর আগেই দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছেন সিরিসেনা। মূলত সিরিসেনার নেতৃত্বাধীন জোট দেশটির সংসদে সংখাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে না এ শঙ্কায় সংসদ ভেঙে দিলেন তিনি। সিরিসেনার সাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপন শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার এমন সিদ্ধান্ত দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় নতুন মাত্রা যোগ করলো। গত মাসে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহকে পদচ্যুত করে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর এ অস্থিরতা শুরু হয়।
পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ই্উএনপি) সিরিসেনার সংসদ ভেঙে দেয়ার এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। তারা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের জন্য প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে দায়ী করেছেন। বিক্রমসিংহের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য সংসদে পুনরায় ভোট করার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
Advertisement
আরও পড়ুন>> শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত, ফের দায়িত্বে রাজাপাকসে
উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিক্রমসিংহকে বরখাস্ত করেন। ওই দিন রাতেই তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন।
বরখাস্তের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে ২৭ অক্টোবর পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকেন বিক্রমসিংহ। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য তার পক্ষে রয়েছেন দাবি করে তিনি এ অধিবেশন ডাকেন। বিক্রমসিংহের এ দাবির পর পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন সিরিসেনা। এরপর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পার্লামেন্টের অধিবেশন ১৬ নভেম্বর থেকে এগিয়ে ৫ নভেম্বর পুনর্নির্ধারণ করলেও পরে তা পিছিয়ে দেন তিনি।
কেননা দেশটির সংসদে মোট ২২৫ টি আসনের মধ্যে এখনো বিক্রমসিংহের প্রতি সমর্থন রয়েছে ১০৫ জন সংসদ সদস্যের।
Advertisement
আরও পড়ুন>> শ্রীলঙ্কায় ফের প্রধানমন্ত্রীর রদবদল হতে পারে
এদিকে ঘটনার পর পার্লামেন্টে ১৫ সংসদ সদস্য থাকা সংখ্যালঘু তামিল ন্যাশনাল অ্যালাইন্স বিক্রমসিংহকে সমর্থনের ঘোষণা দেয়। রাজাপাকসের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা ভোট পাশ করতে হলে প্রয়োজন হতো ১১৩টি ভোটের। এরকম পরিস্থিতিতে মূলত দল আর নিজের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসেকে বাঁচাতেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা।
এসএ/এমএস