জাতীয়

এখনো পলাতক ৫০ জঙ্গি

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট। মুন্সিগঞ্জ বাদে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। এ ঘটনার ১০ বছর পেড়িয়ে গেলেও মামলার চার্জশিটভুক্ত ৫০ জঙ্গিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।২০০৫ সালের এই দিনে দেশের সাড়ে ৪শ’ স্থানে প্রায় সাড়ে ৫শ’ বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের প্রচারণা চালায় সংগঠনটি। ‘ইসলাম প্রতিষ্ঠান যুদ্ধ’র নামে দেশের আদালত, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি আধা-সরকারি স্থাপনায় একযোগে বোমা হামলা করা চালায় তারা। এতে দুইজন নিহত এবং ১০৪ জন আহত হয়।র‌্যাব হেড কোয়ার্টার্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় সারাদেশে মোট ১৬১টি মামলা হয়। সবগুলো মামলা তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ৫৮টি মামলা এখনো বিচারাধীন। রায় ঘোষণা করা হয়েছে ১০৩ মামলার।এদিনের ঘটনায় পুলিশের চার্জশিটে মোট ৬৬০ জঙ্গির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৪৫৫ জনকে গ্রেফতার রয়েছে। পলাতক আছে আরো ৫০ জঙ্গি, ৩৫ জন জামিনে।গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে ২৬৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ১৫ জনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে, কার্যকর হয়েছে ছয়জনের। ১২১ জনকে আদালত বেকসুর খালাস দেন। ১৭ আগস্টের হামলার পরই থেমে থাকেনি জেএমবির জঙ্গিরা। একের পর এক আত্মঘাতী হামলায় বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাসহ ৩৩ জনকে হত্যা করে তারা।এরপরই শুরু হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জেএমবি-বিরোধী অভিযান। গ্রেফতার করা হয় জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম (বাংলা ভাই), আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লাহসহ সাড়ে চারশ’ জঙ্গিকে।ঝালকাঠিতে বোমা হামলায় দুই বিচারককে হত্যা মামলায় ২০০৭ সালে ফাঁসি কার্যকর হয় শীর্ষ ছয় নেতার। দেশজুড়ে এই সিরিজ বোমা হামলার ১০ বছর পার হলেও জামিনে মুক্ত রয়েছে অনেক জঙ্গি। মুক্ত হয়ে সংগঠনের ছদ্মবেশে পুনর্গঠনের কাজ চালাচ্ছে তারা।এ বিষয়ে র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স শাখার পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, র‌্যাব এসব মামলার সরাসরি তদন্ত না করলেও আসামিদের গ্রেফতার করেছে, জঙ্গি দমনে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। পলাতক আসামিরা ভারতে গিয়ে নিরাপদে থাকতে চেয়েছিল। তবে বর্ধমান বিস্ফোরণের পর তারা চাপে রয়েছে। আশা করছি দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে পারবো।সম্প্রতি দেশের জঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বলেন, ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত জঙ্গি দমনে ৬৩২টি মামলায় দুই হাজার ৫৪৩ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ বলছে, জঙ্গি দমনে পুলিশ ৮০ শতাংশই সফল।এআর/এসএইচএস/বিএ

Advertisement