কুষ্টিয়ায় মায়ের কোলে থাকা আট মাস বয়সী আকিফাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া ঘাতক গঞ্জেরাজ পরিবহনের সেই চালক মহিত মিয়া ওরফে খোকনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব। মহিত আকিফা হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।
Advertisement
বুধবার রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর জেলার সদর থানার বঙ্গেশ্বরী এলাকা থেকে র্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়ার একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে মহিত মিয়া ওরফে খোকনকে গ্রেফতার করে।
র্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়ার কোম্পানি কমান্ডার অ্যাডিশনাল এসপি মুহাইমেনুল রশিদ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার মহিত মিয়া ওরফে খোকন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক এমএম মোর্শেদ তার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত একইসঙ্গে আগের দিন ফরিদপুর থেকে র্যাবের হাতে গ্রেফতার গঞ্জেরাজ পরিবহনের মালিক জয়নালেরও জামিন মঞ্জুর করেন।
Advertisement
এদিকে বাসের চালক ও মালিককে জামিন প্রদানের পরদিনই শিশু আকিফা মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুমন কাকাদেরী মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক এমএম মোর্শেদের আদালতে হাজির হয়ে চালক ও মালিককে দায়ী করে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করে মামলাটি ৩০২ ধারায় (হত্যা মামলা) সংযোজন করার আবেদন জানালে আদালত সেটা মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আগের দিন জামিন প্রদান করা বাসচালক ও মালিকের জামিন আদেশ বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা গঞ্জেরাজ পরিবহনের একটি বাস শহরের চৌড়হাস মোড়ের কাউন্টারে এসে থামে। সেসময় থেমে থাকা বাসের সামনে দিয়ে আট মাস বয়সী মেয়ে আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মা রিনা বেগম। হঠাৎ কোনো হর্ন ছাড়াই চালক খোকন বাসটি চালিয়ে দেন।
এতে মায়ের কোল থেকে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয় আকিফা। বাসের ধাক্কায় রিনা বেগমও আহত হন। মুমূর্ষু আবস্থায় ওই দিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩০ আগস্ট না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় শিশু আকিফা।
রাস্তার পাশে থাকা একটি দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হলে এ নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক চ্যাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। আকিফা কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকার সবজি ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদের মেয়ে।
আল-মামুন সাগর/এফএ/আরআইপি
Advertisement