ঈদের আগে পোশাকশ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রতি বছরই এ ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও এ থেকে বের হওয়ার কোনো প্রচেষ্টা নেই বললেই চলে। অথচ এ নিয়ে শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা দেখা দেয়। অনেক সময় অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। যা পোশাকশিল্পের জন্য ক্ষতিকর। তাই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মালিকপক্ষকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। পোশাককর্মীরা যাতে কোনো অবস্থায়ই বঞ্চিত না হয় নিশ্চিত করতে হবে সেটি।
Advertisement
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পোশাক শ্রমিকদের ঈদুল আজহার বোনাস ১৬ আগস্টের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও শ্রম অসন্তোষ নিরসনে গঠিত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কোর কমিটির সভায় প্রতিমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে কারখানার সক্ষমতা ভেদে চলতি মাসের আংশিক বেতন শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে ১৯ আগস্টের মধ্যে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ বা ২৩ আগস্ট দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে।
সড়কে যানজট এড়াতে বিগত ঈদগুলোর মতো এবারও পোশাক কারখানায় পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়ার জন্য মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান চুন্নু। তিনি বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের আগে নেয়া সভায় সিদ্ধান্তগুলো যথাযথভাবে কার্যকর হওয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা যায়নি। মোটামুটি ঝামেলা ছাড়াই আমরা গত ঈদ করতে পেরেছি। আশা করি এবারও কোনো সমস্যা হবে না।’ সভায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বেতন-বোনাস নিয়ে কিছু কারখানায় অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে নজর দেয়ার আহ্বান জানান তারা।
শ্রমিকরা এখনো ২০১৩ সালের মজুরি বোর্ড অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। অথচ নতুন বেতনকাঠামোয় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণ হয়েছে অনেক আগেই। সরকারি খাতের শ্রমিকেরা সেই সুযোগ পেলেও বেসরকারি খাতের শ্রমিকরা তা পাচ্ছেন না। এছাড়া মূল বেতনের সমপরিমাণ উৎসব ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কারখানার মালিক তা মানেন না। বোনাস দেওয়ার হারও কোথাও কম কোথাও বেশি। এই বৈষম্য শ্রমঘন পোশাকশিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে-এটি মালিকপক্ষের মনে রাখা উচিত।
Advertisement
সময়মত বেতন বোনাস না হলে শ্রমিকদের ঈদে বাড়ি যাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিবে। এ কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করতে হবে। শ্রমঘন-পোশাকশিল্প মালিক-শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করে আরো সমৃদ্ধ হয়ে উঠুক-এটিই প্রত্যাশা।
এইচআর/এমএস