অ্যান্টিগায় সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটিং ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে মাত্র ৭ সেশনেই (তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে) ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। জ্যামাইকায় উন্নতি হল খানিক, ম্যাচ শেষ হয়েছে ৯ম সেশনে। বাংলাদেশও এড়াতে পেরেছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের লজ্জা।
Advertisement
অবশ্য ইনিংস ব্যবধানে হারার লজ্জা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। নতুবা প্রথম ইনিংসে ফলোঅন করালে প্রথম ম্যাচের মতোই ৭ সেশন ও ইনিংস ব্যবধানেই হারতে হতো বাংলাদেশকে।
জ্যামাইকায় ইনিংস ব্যবধানে না হারলেও ১৬৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের বোলিং জাদুতে স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১২৯ রানে অলআউট করেও কোন লাভ হয়নি।
ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ব্যর্থতা ধারাবাহিক থেকে ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৬৮ রানে। এখানেও বলা যায় উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। কেননা সিরিজের আগের তিন ইনিংসে যে ১৫০ রানও করতে পারেননি সাকিব-তামিমরা।
Advertisement
প্রায় ২০০ ওভারের বেশি সময় হাতে রেখে ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে সংগ্রামী ইনিংসে ৪৭ রান করা তামিম এদিন ফেরেন খালি হাতেই। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া হোল্ডার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই কাঁপন ধরাতে থাকেন সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে।
আগের তিন ইনিংসে ব্যর্থ মুমিনুল হক ও লিটন কুমার দাশ দেখান খানিক আশার আলো। উইকেটের চারপাশে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে থাকেন লিটন। কিন্তু অতিরিক্ত শট খেলার প্রবণতায় দলীয় ৪০ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
অভিষিক্ত কেমো পলের বোলিংয়ে গালি অঞ্চলে ক্যাচ দেয়ার আগে ৬ চারের মারে ৩৩ বলে ৩৩ রান করেন লিটন। এর খানিক পর ফিরে যান মুমিনুলও। তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। সিরিজের ৪ ইনিংসে তার সংগ্রহ সর্বসাকুল্যে ১৬ রান।
সিরিজ জুড়ে ব্যর্থতার টালিটা আরও লম্বা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আউট হয়ে যান মাত্র ৪ রান করে। পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন দেশ সেরা জুটি সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দুজন মিলে যোগ করেন ৫৪ রান।
Advertisement
কিন্তু দলীয় ১২১ রানের মাথায় আবারো অফস্টাম্পের বাইরের বল বুঝতে না পেরে লেগ বিফোরের ফাঁদে ধরা পড়েন ৩১ রান করা মুশফিক। পরের বলেই সাজঘরের পথ ধরেন নুরুল হাসান সোহান। দুই ইনিংসেই গোল্ডেন ডাকে আউট হয়ে গোল্ডেন পেয়ারের বিরল কীর্তি স্থাপন করেন তিনি।
ইনিংসের বাকি সময়টা মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামকে নিয়ে সংগ্রাম করেন সাকিব। মিরাজ আউট হন ১০ রান করে। সাকিব তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফসেঞ্চুরি। এনিয়ে ক্যারিয়ারে ৯ম বারের মত একই ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়লেন সাকিব।
দলীয় ১৬২ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৫৪ রানে ফিরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক। তখনই মূলত শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম। বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৬৮ রানে। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া হোল্ডার এই ইনিংসে নেন ৬টি উইকেট।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশ এই সফরে খেলবে আরও ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আগামী ২২ জুলাই মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
এসএএস/এমএস