মুন্সীগঞ্জ জেলার কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক, কবি, বিশাকা প্রকাশনীর মালিক ও ব্লগার শাজাহান বাচ্চুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজদিখান উপজেলার কাকালদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
Advertisement
নিহতের ভাতিজা ইরান মিয়া জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে শাজাহান বাচ্চুকে গ্রামে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসী দাফনে বাধা দেন। এমতাবস্থায় মধ্যপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল করিম হাজীর হস্তক্ষেপে জানাজা ও দাফন কাজ সম্পন্ন হয়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম জানান, জানাজায় বাধা বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে স্থানীয় অনেকের কাছ থেকে শুনছি ‘তিনি (শাজাহান বাচ্চু) নাস্তিক মানুষ তার জানাজায় যাওয়া যাবে না।’ এরূপ দু’এক জন জানাজায় না গেলে কী হবে আরও দশজন তো ছিলো।
তিনি আরও জানান, হত্যার ঘটনায় নিহতের ছোট স্ত্রী আফসানা জাহানা মঙ্গলবার সকালে বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।
Advertisement
আফসানা জাহান বলেন, আমার স্বামী ফেসবুকে লেখালেখি করতো। মাঝে মাঝে আমাকে বলতো জঙ্গিরা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
শাজাহান বাচ্চুর মেয়ে দূর্বা বলেন, মরদেহ দেখার আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারিনি, বাবা মারা গেছেন। জানি না কারা মারতে পারে। আর কে করেছে সেটা যেহেতু জানি না সেহেতু কোন দল করেছে তা বলবো কী করে। যা হবে তদন্ত সাপেক্ষেই হবে।
এডিশনাল ডিআইজ আসাদ বলেন, তিনি ব্লগার কিনা জানি না, তবে সবকিছু মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি।
র্যাব-১১ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আশিক বিল্লাহ জানান, আমরা তদন্ত শুরু করেছি, আমাদের হেড অফিস এবং মুন্সীগঞ্জ টিম কাজ করছে।
Advertisement
উল্লেখ্য, সোমবার (১১ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে ৪ জন দুর্বৃত্ত এসে শাজাহান বাচ্চুকে গুলি করে হত্যা করে।
শাজাহান বাচ্চু উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কাকালদি গ্রামের মরহুম মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তিনি সাংবাদিক, কবি, প্রকাশক ও ব্লগার ছিলেন। ঢাকার বাংলাবাজারে বিশাকা প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী ও সাপ্তাহিক আমাদের বিক্রমপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
ভবতোষ চৌধুরী নুপুর/এফএ/এমএস