এ যেন শুভঙ্করের ফাঁকি। সম্পূর্ণ কাজ না করা, এক প্রকল্পের কাজ করে দুই প্রকল্পের শ্রমিক দেখিয়ে বিল উত্তোলন, শ্রমিকদের অর্থচুরিসহ বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুরের অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে।
Advertisement
নিয়ম মেনে কাজ করা হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা দাবি করলেও জেলা প্রশাসক বলছেন, বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে জেলায় ১৮টি ইউনিয়নে ৯০টি প্রকল্পে কাজ করার কথা ৩ হাজার ৫০৭ জন শ্রমিকের। এর জন্য ব্যায় ধরা হয় ২ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার ১২৭ টাকা।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের গাড়াডোব গ্রামের জলিবিল পুনঃখনন ও ইসলামপুর পাড়ার পাকারাস্তা থেকে গনির পুকুর পর্যন্ত রাস্তা মেরামতে ব্যয় ধরা হয় ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। যেখানে কাজ করার কথা ছিল ৫৫ জন শ্রমিকের। কিন্তু জলিবিল খননতো দূরের কথা রাস্তার কাজও হয়েছে অর্ধেক।
অন্যদিকে রাইপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা ব্রিজ থেকে কইকুড়ির ব্রিজ ও ঝোড়পাড়া পাকারাস্তা থেকে বেলতলা ব্রিজ পর্যন্ত দু’টি প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যেখানে ৬০ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা। অথচ অভিযোগ রয়েছে এসব প্রকল্পে অর্ধেক শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে বিল তোলা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ শ্রমিকের।
Advertisement
ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে শ্রমিকদের বিল তোলার কথা থাকলেও বিল নিতে হয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হাত থেকে। শুধু এ দু’টি ইউনিয়নেই নয় জেলার বাকি ১৮টি ইউনিয়নের প্রকল্পেও একই অবস্থা।
এলাকবাসীর দাবি, এসব প্রকল্পে কোনো সময়ই পূর্ণাঙ্গ শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয় না। আবার কাজও হয় দায়সারা। এসব কাজের সুষ্ঠু তদন্তেরও দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, নিয়ম মেনেই সব কাজ করা হয়েছে। প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়নি।
একই কথা বলছেন মেহেরপুর পিআইও অফিসার (প্রকল্প কর্মকর্তা) দিলিপ কুমার সেন। সব অনিয়ম অস্বীকার করে তিনি বলেন, প্রতিটি শ্রমিক ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নিজেরাই টাকা উত্তোলন করেছেন। তবে মেহেরপুর সোনালী ব্যাংকের গাংনী শাখার ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম জানান, অনেক সময় শ্রমিকদের টাকা বেয়ারার চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন ইউনিয়ন সচিব ও জনপ্রনিধিরা।
Advertisement
এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ জাগো নিউজকে জানান, মেহেরপুরে সরকারের অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আসিফ ইকবাল/এফএ/এমএস