পিরোজপুরে দু’সপ্তাহ ধরে জেলার সাত উপজেলায় হঠাৎ করেই ব্যাপকভাবে ডায়রিয়ার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে। সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শনি ও রোববার ঘুরে দেখা গেছে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। শিশু ও বৃদ্ধদের জায়গার সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই মেঝেতে স্থান করে নিয়েছে। রোগীর চিকিৎসা দিতে চিকিৎসক ও নার্সরা হিমশীম খাচ্ছেন।
Advertisement
হাসপাতালের ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ বিভাগ সূত্র জানায়, গত সাত দিনে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯০৬ জন হলেও বেসরকারি সূত্রে জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৬৩০ জন। এ দিকে সদর হাসপাতালে আইভি স্যালাইনের যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে হাসপাতাল বিভাগ থেকে দাবি করা হয়েছে।
বর্তমানে ৫০০ সিসি আইভি স্যালাইনের কোনো মজুত নেই বলে জানান স্টোরকিপার আক্তারুজ্জামান সোহেল। তবে ১ হাজার সিসি আইভি স্যালাইন রয়েছে মাত্র ১০০ পিস। ভর্তিকৃত জরুরি ডায়রিয়া রোগীদেরকে প্রথমবার একটি আইভি স্যালাইন দেয়া হলেও পরবর্তীতে তাদেরকে দ্বিগুন বা তিনগুণ চড়া মূল্যে বাজার থেকে আইভি স্যালাইন ক্রয় করতে হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পিরোজপুরের সাত উপজেলায় ডায়রিয়া ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় রোগী সংখ্যা বেড়েই চলছে। হাসপাতালে খাবার স্যালাইন ও ওষুধের সংকট দেখা দেওয়ায় রোগীর স্বজনদের চড়া দামে বাইরের থেকে ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে। এ দিকে রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে।
Advertisement
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ননী গোপাল রায় জানান, গত এক সপ্তাহে শুধুমাত্র সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ২৯৬ জন রোগী, আর ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে আরও ৪৭ জন রোগী। তিনি জানান, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মাত্র সাত জন রোগী ভর্তির সক্ষমতা থাকলেও সেখানে বর্তমানে ৪৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
চিকিৎসক ডা. ননী গোপাল রায় আরও জানান, অতিরক্ত তাপমাত্রা ও বিশুদ্ধ পানির কারণে রোগীরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। হঠাৎ করে ডায়রিয়া প্রকট আকার ধারণ করায় সরবারহকৃত স্যালাইন সংকট দেখা দিলেও পর্যাপ্ত পরিমান স্যালাইন ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে।
হাসান মামুন/আরএ/জেআইএম
Advertisement