গরু-খাসির রেজালা, চাপ, চিকেন রোস্ট (আস্তা), চিকেন বটি কাবাব, ফ্রাই, জালি কাবাব, শিক কাবাব, শাহী জিলাপি, হালিম-পুরান ঢাকার ইফতারির মতো নতুন ঢাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে এসব ইফতারি। তবে আয়োজনটা একটু ভিন্ন রকম। নেই বিক্রেতার হাঁক-ডাক। তবে আছে নতুনত্ব ও অভিজাত্য। বলছিলাম রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত গুলশান রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতারির নানা আয়োজনের কথা।
Advertisement
ভিনদেশি রেস্টুরেন্টগুলোর আদলে সাজানো, জাঁকজমকপূর্ণ এসব রেস্টুরেন্টে চলছে ইফতারির নানা প্যাকেজসহ বাহারি সব ইফতারির নজরকারা আয়োজন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার পরিবেশনার পাশাপাশি রেস্টুরেন্টের প্রবেশ মুখে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন পরিপাটি স্মার্ট রেস্টুরেন্ট কর্মীরা। এগিয়ে দিচ্ছেন দামের তালিকাসহ ইফতারির মেন্যু কার্ড। এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে দেশীয় খাবারের পাশাপাশি বিদেশি খাবারের নানা ইফতারি। যেন অভিজাত এলাকা গুলশানের ইফতার বাজারেও রয়েছে অভিজাত্যের ছোঁয়া।
গুলশান-১ নম্বর চত্বরেই অবস্থান আব্রেলা রেস্টুরেন্টের। বাইরেই বড় করে টাঙানো আছে ইফতারের প্যাকেজের তথ্য। এগিয়ে যেতেই দেখা মিললো সুন্দর করে সাজানো রেস্টুরেন্টের ভিতরের অবস্থান। সাজানো গোছানো পরিবেশেই বসে থেকে খাওয়ার আয়োজন আছে সেখানে। কথা হয় রেস্টুরেন্টের সিইও মেহেদি হাসানের সঙ্গে। তিনি জানান, রমজান উপলক্ষে তাদের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় প্যাকেজটির নাম ইফতার কাম ডিনার বাফেট।
এই প্যাকেজটিতে সর্বমোট ৬৫টির বেশি আইটেম রয়েছে। কাস্টমারদের জন্য ইফতারি সময় থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থাকছে এই আইটেমগুলোর খাওয়ার সুযোগ। আর এজন্য জনপ্রতি গুণতে হবে ৭৮৬ টাকা।
Advertisement
মেহেদি হাসান জানান, এছাড়া রয়েছে কর্পোরেট টেক আউট ইফতার বক্স। এসবের মূল্যে যথাক্রমে ১৯৯, ২৯৯,৩৯৯ ও ৪৯৯ টাকা।
রেস্টুরেন্টটিতে বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করতে এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হানুল হক রাহি। তিনি বলেন, আমরা ঘুরে ঘুরে প্রতি ইফতারি রেস্টুরেন্টে করি। এখানকার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে ভিন্ন রকম এই প্যাকেজটা। ৬৫টির বেশি আইটেম ইফতারির সময় থেকে রাত সাড় ৯টা পর্যন্ত সময়ে খাওয়ার সুযোগ। আসলেই এই এলাকার ইফতারির আয়োজনে আভিজাত্যের ছোঁয়া আছে।
গুলশান-১ থেকে শুটিং ক্লাবের দিকে যাওয়ার রাস্তায় টেক অ্যাওয়ে ইফতার আইটেমসহ নিয়ে নানা আয়োজন রেখেছে অ্যাবাকাস রেস্টুরেন্ট। কথা হয় রেস্টুরেন্টটির ডিজিএম মারুহ হোসেন সঙ্গে। তিনি জানান, আমাদের এখানে ইফতারির অনেক আইটেম পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া টেক অ্যাওয়ে ইফতার প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ৪০০-৬০০ টাকা দামের বক্স আইটেম। এছাড়া শাহি হালিম মার্টন, হোল চিকেন রোস্ট, চিকেন তন্দুরি, বিফ রিবস, কাবাব, চিকেন ললিপপসহ প্রায় ৪৩ আইটেমের ইফতারি।
এদিকে ইফতারি নানা আইটেমে কিনতে ভোজন বিলাসীদের ভিড় দেখা গেল গুলশানের ফখরুদ্দিনে। পুরান ঢাকার নানা ঐতিহ্যের ইফতারি আইটেম রাখা আছে সেখানে। মূলত ক্রেতাদের আকর্ষণের জায়গা সেখানেই। এখানে পাওয়া যাচ্ছে খাসির হালিম, গরু-খাসির চাপ, রেজালা, খাসির লেক রোস্ট, কাবাব, চিকেন ফ্রাইসহ নানা আইটেম।
Advertisement
কথা হয় রেস্টুরেন্টটির এডমিন অফিসার নাজির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের এখানে ঐতিহ্যের কারণে প্রতিদিন ইফতারিতে কাস্টমারদের ভিড় থাকে। আর নানা আয়োজনের এমন সব আইটেম পেয়ে ক্রেতারাও আকৃষ্ট হয়। অনেক আয়োজন করি তবুও ইফতারির আগে আগে সব আইটেম ফুরিয়ে যায়।
দরদাম সম্পর্কে তিনি বলেন, গরুর চাপ, রেজালা ৮০০, খাসির লেগ রোস্ট ১০০০, চিকেন রোস্ট আস্তা ৪৮০, চিকেন বটি কাবাব ১৪০, জালি কাবাব ৪০, জিলাপি ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সেখানে ইফতারি কিনতে আসা ক্রেতা লুৎফর নাহার বলেন, পুরান ঢাকায় চকবাজারে যেতে না পারলে এখানে আসি ইফতারি কিনতে। পুরান ঢাকার মত নানা আইটেমসহ গুণগতমান থাকায় ইফতারি কিনতে কাস্টমারদের ভিড় হয় এই দোকানে। তাই সুযোগ পেলেই আমরাও আসি এখানে ইফতার কিনতে।
এএস/জেএইচ/এমএস