ফিচার

বৃদ্ধ নিতুর বয়স এখন এগারো!

পৃথিবীর বিরল রোগের মধ্যে একটি হচ্ছে প্রজেরিয়া। প্রজেরিয়া মূলত এক ধরনের জেনেটিক ডিজঅর্ডার। এ রোগে অাক্রান্তরা ৫-১০ বছরেই বৃদ্ধ হয়ে যায়। প্রতি ৮০ লাখ শিশুর মধ্যে ১ জন আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আক্রান্তরা সাধারণত ১৩-১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে হবিগঞ্জের এগারো বছর বয়সী নিতু। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শাহরিয়ার কাসেম-

Advertisement

হবিগঞ্জ পৌরসভার শায়েস্তানগর এলাকায় নিতুদের বসবাস। বাবার নাম কামরুল হাসান। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। মা গৃহিণী। নিতুসহ ওদের পরিবারে আটজন সদস্য। কামরুল হাসানের সামান্য রোজগারে পরিবারের ভরণ-পোষণে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন।

নিতুর জন্মের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। আঠারো থেকে ছাব্বিশ মাস বয়সে আরো লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগের লক্ষণ প্রকট হয়ে ধরা দেয়। নিতুর অস্বাভাবিক শারীরিক গঠনে বাবা-মা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। বিভিন্ন চিকিৎসার পরেও কোন সুফল না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

নিতুর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৈহিক গঠনও অন্য দশজন ছেলে-মেয়ের চেয়ে আলাদা হয়ে যায়। যে সময় পাড়ার ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে দিনভর খেলাধুলায় মগ্ন থাকার কথা; অথচ সে সময় পাড়ার ছেলে-মেয়েরা নিতুর সঙ্গে মেশে না। বরং নিতুকে দেখলে ভয় পায়।

Advertisement

নিতুর শারীরিক উন্নতি না পেয়ে যখন মা-বাবা দিশেহারা; তখন এক সমাজসেবীর চোখে পড়ে। সেই সমাজসেবী চৌধুরী জান্নাত রাখিই বর্তমানে নিতুর সম্পূর্ণ দেখভাল করছেন। পরম আদরে তার ছেলে-মেয়ের সঙ্গে অবাধে মিশতে দিচ্ছেন। তার পরিবারে আসার পর নিতু এখন আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ। নিতু এখন খেলছে, ছবি আঁকছে, টিভি দেখছে। অন্য দশজনের মতোই দিন কাটাচ্ছে।

নিতু সম্পর্কে চৌধুরী জান্নাত রাখি বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বে নিতুরা চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে, সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। এখন নিতুর বয়স এগারো। হয়তো পনেরো নাগাদ এ বিশ্ব হারাবে একজন নিতুকে।’

এসইউ/এমএস

Advertisement